বাংলাদেশের আবাসন সমস্যা রচনার একটি নমুনা তৈরি করবো আজ। আশা করি এটি শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে। খাদ্য এবং পোশাকের পর মানুষের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আশ্রয়ের। বাংলাদেশ সংবিধানের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে ১৫(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র মানুষের মৌলিক প্রয়োজন যথা- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যবস্থা করবে। অবশ্য বাংলাদেশে গৃহায়ন একটি অবহেলিত খাত।
Table of Contents
বাংলাদেশের আবাসন সমস্যা
১৯৯১ সালের আদমশুমারির হিসাবে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের ২ কোটি ১০ লক্ষ পরিবারের মধ্যে ১ কোটি ৮০ লক্ষ গ্রামে বাস করে। একই সময়ে গ্রামে ১ কোটি ৮৫ লক্ষ এবং শহরে ৩ কোটি ৩০ লক্ষ বাসস্থান ছিল। গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৩০ শতাংশ পরিবারের যথোপযুক্ত কোনো আশ্রয় নেই; শহরে এই আশ্রয়হীন পরিবারের হার হলো ২০ থেকে ৩৩ শতাংশ। গ্রামে পাকা বাড়ির সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি নয় এবং শহরে সে সংখ্যা হলো ৪০ শতাংশ।
গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ১৯৯১ সালে দেশে গ্রামীণ এলাকায় ২১.৫ লক্ষ এবং শহর এলাকায় ৯.৫ লক্ষ বাসস্থানের ঘাটতি ছিল। এছাড়াও দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বাসস্থান এমন দুরবস্থায় ছিল যে, তাদের মেরামত এবং পরিবর্ধন ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাসস্থান নির্মাণের কাজ ব্যক্তিগত পর্যায়ে ঘটে থাকে এবং সেজন্য মোটামুটিভাবে সম্পদ আহরণ করে ব্যক্তিবিশেষ; প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাসস্থান নির্মাণ হয় খুবই নগণ্য ।
বাংলাদেশের গৃহায়ন সমস্যা
জনবহুল বাংলাদেশে গৃহায়ন সমস্যা অন্যতম জাতীয় সমস্যা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতি রেখে এখানে গৃহায়ন সম্ভব হচ্ছে না বলে দিনে দিনে আবাসিক সমস্যা প্রকটতর হয়ে উঠছে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এ দেশের নগরগুলো অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে এমনভাবে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে, অধিকাংশ শহরেরই আবাসিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে।
নগরে বিপজ্জনক হারে ভাসমান মানুষ, বস্তিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধি, গৃহনির্মাণ উপকরণের দুর্মূল্য, জমি কেনাবেচায় ফটকাবাজ ও স্বার্থানেষীদের দৌরাত্ম্য, আকাশচুম্বী বাড়িভাড়ার পাশাপাশি পানীয় জল ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভাবে শহরের মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র জনগণের গৃহায়ন সমস্যা এখন বহুগুণান্বিত হয়েছে। গৃহায়ন খাতে অনেক সমস্যা রয়েছে।
সর্বপ্রথম সমস্যা হলো একটি ঘন অধ্যুষিত, বন্যা কলিত সমতল দেশে উঁচু জমির দারুণ অভাব; এর ফলে জমির দাম অত্যন্ত চড়া।
দ্বিতীয়ত, জমির মালিকানা নিয়ে প্রচুর জটিলতা রয়েছে এবং নিশ্চিতভাবে মালিককে চিহ্নিত করা খুবই কষ্টসাধ্য।
তৃতীয়ত, গৃহায়ন বিষয়ক আইন হয়নি, অথবা অত্যন্ত জটিল। যেমন ঢাকায় বহুতল দালান নির্মাণে অনেক বাধা-বিপত্তি রয়েছে।
চতুর্থত, গৃহ নির্মাণ সামগ্রীর অভাব খুব বেশি এবং বেশিরভাগ উপাদান বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
পঞ্চমত গৃহ নির্মাণ প্রযুক্তিতে গবেষণা তেমন সাফল্য লাভ করেনি। এবং স্বল্পমূল্যের গৃহায়ন মোটেই প্রচলিত নয়।
সর্বশেষে একটি বিতর্কমূলক বিষয় হলো বাড়ির মান নিয়ে বাজারের প্রচলিত ধারণা। সাধারণত যারা বাড়ি বানাতে বা কিনতে চান তারা উন্নতমানের বাড়ি চান। যার ফলে নিম্নমানের বাড়ি খুব কমই নির্মিত হয়। গৃহায়ন খাতের দুরবস্থার জন্যে মূলত দেশব্যাপী নিম্নহারের সঞ্চয় প্রবৃত্তি ইত্যাদি। এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এত কম যে, সঞ্চয়ের সুযোগ তত নেই; কিন্তু তার চেয়েও বেশি অসুবিধা হলো সঞ্চয়কে এগিয়ে দেবার জন্য যেসব আর্থিক ব্যবস্থার প্রয়োজন তার গুরুতর অভাব। গরিব যেমন ঋণ পায় না, তেমনি মধ্যবিত্ত ও গৃহায়নের জন্য কোনো ঋণ পায় না।
প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য অনেক বেশি। এর কারণ মূলত বিদেশী সামগ্রীর উপর নির্ভরশীলতা। নির্মাণ সামগ্রীর ৮০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ইট এবং বালি বাদ দিরে বাদবাকি প্রায় সবই আমদানি করা হয়। আমদানি মূল্যের উপর ডিউটি/ট্যাক্স বসানোর পর যখন খুচরা বাজারে আসে তখন এসবের মূল্য অনেক বেড়ে যায়।
গৃহায়নকে সরকারিভাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিল্প হিসেবে গণ্য করা হয়। এমনকি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এটাকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একে শিল্প হিসেবে গণ্য করে না। এই শিল্পের বিকাশের জন্য একে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসা যথা- নির্মাণ সামগ্রী এবং অর্থায়ন কোম্পানিগুলোকে কর অবকাশের সুযোগ দিলে দেশের গৃহায়ন সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। এছাড়াও এ শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের সাথে সাথে দেশে বেকার সমস্যাও কিছুটা সমাধান সম্ভব ।
বাংলাদেশে জমির মালিকানা নিয়ে প্রচুর জটিলতা রয়েছে। নিশ্চিতভাবে মালিককে চিহ্নিত করা খুবই কষ্টসাধ্য। স্বাধীনতা-পরবর্তী জমির মালিকানা নিয়ে কোনো সার্ভে করা হয়নি। জমি সংক্রান্ত আইন- কানুনও বেশ জটিল। কোনো কারণে আদালতে গেলে মামলার নিষ্পত্তি হতে এক যুগেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
পাশ্চাত্যের দেশসমূহে গৃহঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিন মাসের মধ্যে আদালতের রায় নিয়ে বাড়ি নিলামে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায় করা যায়। দেশে এখনও গৃহায়ন বিষয়ক যুগোপযোগী আইন হয়নি। যেসব আইন আছে তাও অত্যন্ত জটিল । এসব আইনের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। সম্পত্তি হস্তান্তর প্রক্রিয়াও খুবই জটিল এবং ব্যয়সাপেক্ষ। সম্পত্তির হস্তান্তর রেজিস্ট্রির খরচ পড়ে ২১ শতাংশ। এছাড়া আনুষঙ্গিক খরচ ২ শতাংশ এবং প্রচুর ঝামেলা।
শহরাঞ্চলে গৃহায়ন পরিস্থিতি
বাংলাদেশে ঢাকাসহ কয়েকটি শহরে আবাসন সমস্যা এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর মূল কারণ জনসংখ্যার বিপুল বৃদ্ধি। রাজধানী ঢাকায় এখন এক কোটি লোকের বাস। এর মধ্যে ২০ লাখেরও বেশি বস্তিবাসী। এ সংখ্যা আরও বাড়ছে। ফলে ফুটপাতে, ঝুপড়িতে, বস্তিতে কিংবা মুক্ত আকাশের তলে মানুষকে ‘দিন যাপনের প্রাণ ধারণের গ্লানি’ ভোগ করতে হচ্ছে। আবাসন বঞ্চিত এসব মানুষ নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করে, ঝড়ে-জলে ভুগে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
অন্যদিকে শহরগুলোতে গৃহায়ণের সুযোগ কেবল বিত্তবানদের মধ্যেই একচেটিয়াভাবে সীমিত হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের শহরগুলোতে ঘনবসতি এবং জমির অপ্রতুলতা নগরীয় গৃহায়নে আরেকটি বড় সমস্যা। গত কয়েক বছর ধরে ঢাকা শহরের পরিধির প্রসার ঘটেনি। ঢাকা শহরে যেভাবে দিন দিন জনবসতি বাড়ছে সেখানে এখন শুধুমাত্র পার্শ্ববর্তী জমির উন্নয়ন করে শহর বড় করলেই চলবে না, প্রয়োজনে স্যাটেলাইট টাউন গড়ে তুলতে হবে।
সরকারি উদ্যোগ ছাড়া যেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বেসরকারি উদ্যোগে অমির উন্নয়ন, আবাসিক প্লট তৈরি এবং গৃহনির্মাণ সম্ভব হতে পারে কিন্তু রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, সুয়ারেজ ইত্যাদির সুব্যবস্থা করার জন্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে এখনই চিন্তাভাবনা না করলে আগামী দশ বছর পর ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে।
ঘনবসতি এবং জমির অপ্রতুলতার কারণে জমির দাম দিন দিন বাড়ছে। আজ থেকে ৫ বছর আগেও গুলশান বনানীতে কাঠা প্রতি জমির দাম ছিল ৬/৭ লাখ টাকা, আজকে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩০/৩৫ লাখ থাকায়। এসব মিলিয়ে এপার্টমেন্টের মূল্য বাড়ছে অস্বাভাবিক গতিতে।
অস্বাভাবিক মূল্যের যে কোনো উৎপাদনে অর্থায়ন করতে হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অতিরিক্ত সতর্কতার অবলম্বন করা প্রয়োজন । বন্ধকী সম্পত্তির বাজার মূল্য প্রদত্ত ঋণের নিচে নেমে গেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বেকায়দায় পড়ে যেতে পারে। অবশ্য সেসব ক্ষেত্রে সঠিক ঋণ পর্যালোচনা এবং বাছাইয়ের অভাবই প্রধানত দায়ী।
গ্রামাঞ্চলে গৃহায়ন পরিস্থিতি
বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের আবাসস্থল গ্রামবাংলায়ও গৃহায়ন সমস্যা কম নয়। গ্রামাঞ্চলে শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ নিম্নমানের ঘরে বাস করে। এখানে শতকরা ৭০ শতাংশ বাড়ি খড়ের ছাউনির । তাছাড়া শতকরা ৩০ শতাংশ লোক গৃহহীন। ফলে ঝড়- জল-বন্যায় তাদের দুঃখের সীমা থাকে না। গ্রামাঞ্চলে গৃহায়নে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও নেই বললেই চলে। ফলে অল্প কিছু সচ্ছল লোক ছাড়া গ্রামে অধিকাংশ লোককেই গৃহসমস্যায় জীবন কাটাতে হচ্ছে।
গৃহায়ন সমস্যার কারণ
আগেই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গৃহায়ন সমস্যার মূলে রয়েছে জনসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধি । এ বিপুল জনসংখ্যার অধিকাংশই বাস করে দারিদ্র্যসীমার নিচে। বাঁচার জন্য দু বেলা যাবার ও পরনের কাপড় যোগানোর সামর্থ্য যাদের নেই, তাদের পক্ষে গৃহনির্মাণের স্বপ্ন দুরাশা মাত্র। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রায় কোটিরও বেশি কর্মক্ষম লোক বেকার। তাদের কাছে বাসস্থানের সংস্থান করা বলতে গেলে দুঃস্বপ্ন। তৃতীয়ত, দেশে জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও ভূমির পরিমাণ একই থেকে যাচ্ছে। ফলে গৃহায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি পাওয়াও সকলের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কেবল যারা বৈধ-অবৈধ প্রচুর টাকার মালিক তাদের হাতেই কুক্ষিগত হচ্ছে ভূসম্পদ। তারা একের পর এক বাড়ি তৈরি করে তা ভাড়া দিয়ে আরও অর্থবিত্তের মালিক হচ্ছে। কেউ কেউ হাউজিং সোসাইটির ব্যবসায় ফেঁদে বিত্তের পাহাড় গড়ছেন ।
গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ
গৃহায়ন সমস্যার সমাধানে মূলত মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যাপক গৃহায়ন নীতি ও পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত লক্ষাগুলো সামনে থাকা দরকার
১. গ্রাম ও শহরের মধ্যবিত্ত থেকে গরিব গৃহহীনদের গৃহায়ন পরিকল্পনার আওতায় আনা;
২. বস্তি উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বস্তি প্রসার রোধ করার কৌশল ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ;
৩. শহরমুখী অকল্পনীয় জনস্রোত বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিকেন্দ্রীকরণ:
৪ গৃহারনের জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, এজন্য সম্পদের সমাবেশ;
৫. স্বল্প ব্যয়ে টেকসই গৃহনির্মাণে উপকরণ তৈরি ও স্বল্প ব্যয়ের প্রযুক্তি উদ্ভাবন;
৬. ব্যাপক জনগণের আবাসনকে নিশ্চিত করার জন্য শহরাঞ্চলে জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ এবং বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ নিরুৎসাহিতকরণ।
গৃহীত কর্মসূচি
জাতীয় জীবনে একটি প্রকট সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত বাংলাদেশের গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে নানা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মধ্যে সহজ শর্তে গৃহঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। কিছু কিছু আবাসিক প্লট তৈরি, এমনকি ফ্ল্যাট নির্মাণ করেও সরকার স্বল্পমূল্যে হস্তান্তরের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। গ্রামের গৃহহীন লোকদেরকে ঠিকানা গড়ে দেয়ার জন্য নেয়া হয়েছে আশ্রায়ন প্রকল্প। তাছাড়া সরকারি খাস জমি গৃহহীনদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদানের জন্যও সরকার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বেসরকারি পর্যায়েও অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে- যারা এককালীন কিংবা কিস্তিতে আবাসিক প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দের উদ্যোগ নিয়েছে ।
গৃহায়নে জাতিসংঘের আহ্বান
বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি আশ্রয়হীন মানুষের ঘর বাঁধার স্বপ্নকে সফল করার চেষ্টায় জাতিসংঘ ১৯৮৭ সালে আন্তর্জাতিক আবাসন বর্ষ পালন করে। তাদের ঘোষণা ছিল আবাসন মানুষের মৌল অধিকার ও প্রয়োজন’। এর ফলে আবাসন সমস্যা নিয়ে আমাদের সচেতনতা বেড়েছে । কিন্তু বাস্তবে আমরা খুব বেশি এগুতে পারিনি।
উপসংহার
আবাসনের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করা সহজ কাজ নয়। কেবল স্লোগান-সেমিনারের মাধ্যমে তা কখনো অর্জিত হবে না। সমস্যার ব্যাপকতা আমাদের বুঝে নিতে হবে। এ সমস্যা সমাধানের পথে প্রয়োজন হবে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, গ্রামীণ জীবনের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন, বন্যা সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ। একটি গৃহ সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত।
সবার জন্য বাসস্থান ব্যতিরেকে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন গৃহনির্মাণ শিল্পের সার্বিক প্রসার। শিল্পের উন্নয়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাউজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা হাউজিং ব্যাংক গঠন করা হয়।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাংক (এনএইচবি) গঠন করে হাউজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে এর অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এই সেক্টরের সার্বিক তত্ত্ববধায়নের জন্য এ রকম বিকল্প কিছু করার ব্যাপারে ভেবে দেখা উচিত।
আরও দেখুনঃ