Site icon Bangladesh Gurukul [ বাংলাদেশ গুরুকুল ] GDCN

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ : একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে বিস্ময়কর উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনও আমরা অপেক্ষা করছি জরাজীর্ণ একটি শিক্ষাব্যবস্থাকে পুঁজি করে। যে কোনো সমাজ ব্যবস্থায়ই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন, জনগণের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পূর্বশর্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন।

এ কথা না বললেই নয় যে, আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা তথা উচ্চ শিক্ষার গুণগত ও মানগত বিচারে অন্যান্য দেশ থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। এ পুরাতন শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন না করতে পারলে আমাদের সার্বিক অগ্রগতি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

 

 

Table of Contents

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ

 

দেশ ও সমাজের চাহিদার সাথে আমাদের শিক্ষার সামঞ্জস্য না থাকায় সমস্যাসমূহ ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও বিশ্ব অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান বিশ্বে যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমান বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার পরিমার্জন, পরিবর্ধন আবশ্যক।

আর এ সবকিছুর মূলে যে কাজটি প্রথমেই করতে হবে তা হলো- শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি। শিক্ষার সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হলেই শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে সৃজনশীল, উৎপাদনশীল, দায়িত্ববান, কর্তব্যনিষ্ঠ জনবল তৈরি হবে এবং সে সাথে দেশীয় অর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে।

বাংলাদেশের প্রচলিত উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা

আমাদের দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বারো বছরের শিক্ষাজীবন শেষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণ, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা এ তিন ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণ শিক্ষায় বিএ, বিএ (অনার্স), এমএ তিনটি পর্যায় রয়েছে।

সাধারণ শিক্ষা কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য এ তিনটি ধারায় প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজসমূহে এ স্তরের পাঠদান করা হয়। দেশে মোট ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ৫৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ২৩০০ কলেজ রয়েছে।

প্রযুক্তিগত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান শতাব্দীর সাথে সাথে আমাদের দেশও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় মোটামুটি এগিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ৫টি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, ১টি টেক্সটাইল কলেজ ও ১টিতে লেদার টেকনোলজির ওপর স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চার বছর মেয়াদি। পেশাগত সনদপত্র প্রদান করে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ানো হয় ।

চিকিৎসাক্ষেত্রে আধুনিক বিশ্বে যে সাফল্য সূচিত হয়েছে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিপুল দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের দেশে ১৪টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং ১টি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩১টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসাক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করা হয়।

 

 

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ন্ত্রণে দেশের ২২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যা উচ্চতর পর্যায়ে স্নাতক স্নাতকোত্তর পর্বে পাঠদান করছে। তবে এদের মধ্যে মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখে চলছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বাদে বাকিগুলো তাদের গুণগত মান প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। অধিকতর পুরানো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিভাগে এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রিও প্রদান করা হয়। তবে সমস্যার কথা হলো- দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই।

ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শিক্ষা জীবন শেষ পর্যন্ত একজন ছাত্রকে সমন্বয়হীনতার মধ্যে থাকতে হয়, যা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বাধাস্বরূপ। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাত্রাতিরিক্ত শিক্ষা ব্যয়ের জন্য উচ্চবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শতাধিক কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। কলেজগুলোতে অনুষ্ঠিত কোর্স ও পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে দুটো প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে নতুন জ্ঞানের সৃজন ও প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞানের সীমারেখাকে ক্রমাগত বিস্তৃত করা। এ দুটো কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা, অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী ও প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো অপরিহার্য।

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার পাঠ্যক্রম

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত পাঠ্যক্রম, শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং প্রদত্ত ডিগ্রির মান, গবেষণালব্ধ ফলাফল ইত্যাদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত মনের মাপকাঠিতে কোথায় অবস্থান করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দক্ষ শিক্ষকের অভাব, শিক্ষার উপকরণের স্বল্পতা, সার্বিক পরিকল্পনার অভাব উচ্চ শিক্ষার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অদ্যাবধি প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যক্রম ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার চলমান এক অংশ হিসেবেই পরিগণিত। পাঠ্যক্রম ও শিক্ষা পদ্ধতির অনগ্রসরতার কারণে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের পক্ষেও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

ডিগ্রি প্রোগ্রামের মেয়াদের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। বর্তমানে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির ক্ষেত্রে চার বছরের কোর্স চালু রয়েছে। এক্ষেত্রে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিকেই প্রান্তিক ডিগ্রি হিসেবে পরিগণিত করা হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুরু থেকেই চার বছর মেয়াদি প্রান্তিক ডিগ্রি চালু করেছে।

 

 

আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে প্রধান সমস্যা হলো পারস্পরিক সমন্বয়ের অভাব। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে সেমিস্টার পদ্ধতি এবং বাৎসরিক কোর্স পদ্ধতি চালু রয়েছে। ফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম ও পাঠদান প্রক্রিয়ায় অসামঞ্জস্যতা দেখা যাচ্ছে। আবার গ্রেডিং পদ্ধতিতেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেটার গ্রেডিং প্রথা চালু রয়েছে। অন্যদিকে দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণী পদ্ধতিতে গ্রেডিং করা হচ্ছে। একই বিষয়ে গ্রেডিং ভিন্নতার কারণে কর্মবাজারে ডিগ্রিধারীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে বাধ্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিষয়ে বাংলা ভাষার মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া হয় কিন্তু বাংলা ভাষায় উচ্চস্তরের মানসম্পন্ন বই অপ্রতুল ফলে ছাত্রছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানের কৌশল ও মাধ্যম ভিন্ন হওয়ায় ডিগ্রির মূল্যায়নে সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে।

উচ্চ শিক্ষার পরীক্ষা পদ্ধতি

আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থায় অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে পরীক্ষা পদ্ধতির জটিলতা। বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করার মানসিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও তার ধরন এক্ষেত্রে একটি প্রধান সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রশ্নপত্র রচনায় বহিঃপরীক্ষকের প্রশ্ন করার ট্র্যাডিশন থাকলেও প্রায়শই কোর্স শিক্ষকের অধিকাংশ প্রশ্নই প্রশ্নপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে করে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন মুখস্থ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং ভালো গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়ে থাকে।

যে কোনো শিক্ষাব্যবস্থার মান নির্ণয়ে পরীক্ষা বা উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামগ্রিকভাবে শিক্ষা প্রক্রিয়ার মূল্যায়নই পরীক্ষার যথার্থ ভূমিকা। উচ্চতর শিক্ষা পর্যায়ে বিভিন্ন ি প্রতিষ্ঠানের উত্তরপত্র মূল্যায়নে বিদ্যুতা পরিলক্ষিত হয়। সেমিস্টার পদ্ধতি অনুসৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উত্তরপত্র মূল্যায়নে বহিঃপরীক্ষক রাখার ব্যবস্থা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

আর্থিক ব্যয় ও ফলাফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এ ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। বার্ষিক পদ্ধতিতে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিটি বিষয়ে একজন বহিঃপরীক্ষক মূল্যায়ন করেন। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উচ্চশিক্ষার সকল ক্ষেত্রে পরীক্ষা পদ্ধতির আধুনিকায়ন অত্যাবশ্যক। বর্তমান পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তে ছাত্রছাত্রীরা নোট ও ফটোকপির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

শিক্ষকদের জবাবদিহিতার অভাবে অনেক শিক্ষকই কোনো প্রকারে সিলেবাস শেষ করার প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়েন। প্রশ্নের ধরন পরিবর্তন, বিশ্লেষণ ধর্মী প্রশ্ন ও সকল অধ্যায়ের সংমিশ্রণে এবং পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্ন বাদ না দিয়ে প্রশ্ন করা হলে ছাত্রছাত্রীরা নোট ও ফটোকপি প্রবণতা বন্ধ করে পড়াশুনায় মনোযোগী হবে।

 

 

উচ্চতর গবেষণা

উচ্চ শিক্ষার একটি বিশেষ অংশ হচ্ছে উচ্চতর বিষয়ভিত্তিক গবেষণা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আর্থিক সংকটের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সেশন জট, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার পরাজয়, মূল্যবোধের অবক্ষয়, জাতীয় ও সমাজজীবনে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে।

দেশের ধনী ও প্রভাবশালী অংশ দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা শেষে বিদেশে প্রেরণ করছেন। অনেকে বিশ্ববিদালয় পাঠ শেষে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশে গমন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষকরাও যথাশীঘ্র বিদেশে পাড়ি দিয়ে গবেষণা করছেন। এদের অধিকাংশই দেশে ফেরার পক্ষপাতি নন। দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কোথাও M. Phill Ph. D স্তরে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ল্যাবরেটরিভিত্তিক কোনো বিষয়েই পাঠদান করা হয় না। গবেষণালব্ধ প্রকাশনাই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ধারক হলেও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা কার্যক্রম হতাশাব্যঞ্জক। গবেষণা কার্যক্রমের করুণ অবস্থার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো অধিকাংশ শিক্ষক প্রফেসর পদে সমাসীন। শুধুমাত্র একাডেমিক স্বার্থে অল্পসংখ্যক শিক্ষক গবেষণার সাথে জড়িত আছেন।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা:

২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে চীনের সাংহাইয়ে অবস্থিত জিয়াং টাঙ ইউনিভার্সিটির The Institute of Higher Education -এর ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি বিবরণীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশ্বদ্যিালয়ের মানগত অবস্থান প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু অতীব দুঃখজনক হলেও সত্য যে পৃথিবীর ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়নি । এমনকি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শীর্ষ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পায়নি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর একমাত্র উচ্চ শিক্ষা বাদে সর্বক্ষেত্রেই কিছু না কিছু উন্নতি লাভ করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে, পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে কিন্তু আমাদের উচ্চ শিক্ষা দিনদিন নিম্নগামী হচ্ছে। কিন্তু কেন? এর উত্তরে বলা যায়, আমরা নিজেরাই এ অবস্থার জন্য দায়ী।

নিজেরা বলতে উচ্চ শিক্ষা সম্পর্কে যারা পলিসি প্রণয়ন করেন, রাজনৈতিক নেতারা, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, আরও যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। যদি এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে তাহলে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান অতি শীঘ্রই সাধারণ কলেজের স্তরে নেমে আসবে।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর কথা বাদ দিলাম। যেখানে শ্রীলংকার শিক্ষার হার ৯১.৪%, মালদ্বীপের ১৬.২%, মিয়ানমারের ৮৫.৪% সেখানে বাংলাদেশের শিক্ষার হার মাত্র ৬২.৬৬%। এ পরিস্থিতি থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশের শিক্ষার অবস্থান কোথায়।

১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে ব্যয় ছিল মোট বাজেটের মাত্র ২.৩%। সেখানে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে মোট ব্যয় ছিল ৬,৭৪০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১২.৯৬% এবং ২০০৫-০৬অর্থবছরে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশে মোট ব্যয় ৯,৬৮৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৫.০৪% ।

সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারি বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তারপরও শিক্ষার মান আজও নিম্নমুখী। আর এ পরিস্থিতির জন্য প্রথমত দায়ী অস্থিতিশীল শিক্ষার পরিবেশ, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা । বাজেটের অপব্যবহার। মোটকথা, উচ্চ শিক্ষার জগতে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রথমেই আমাদের শিক্ষার নির্ধারকদের চিন্তাকে উচ্চমুখী করতে হবে।

 

 

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার প্রতিবন্ধকতাসমূহ

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটছে। যার প্রভাব উচ্চ শিক্ষা স্তরে বিশেষভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। শতকরা ৫-১০ জন শিক্ষার্থীর মান আদর্শমানের কাছাকাছি হলেও গড়পড়তায় শিক্ষার মানের যে ক্রমঃনিম্নমুখিতা ঘটছে তা অনস্বীকার্য। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত, যা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশকে ব্যাহত করে তা নিচে উল্লেখিত হলো

১. ছাত্র রাজনীতি ও সন্ত্রাস

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলন, ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিমুক্তিতে ছাত্ররা জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশের উচ্চ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজমান সন্ত্রাসী পরিবেশ দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে নিয়েছে। কার্যক্রমে অরুপান্তরিত হে শিক্ষাঙ্গনকে এক অস্থিতিশীল অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। আবাসিক হলসমূহে সিট বণ্টন এক রূপকথায় পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত কার্যক্রমই নিয়ন্ত্রিত হয় তথাকথিত ছাত্রনেতাদের অদৃশ্য অগুলি প্রদর্শনে। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ও হল দখল, ক্যাডারদের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নমনীয় অবস্থান, শিক্ষকদের রাজনীতি চর্চা প্রভৃতির ফলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আজ মৃত পথযাত্রী।

রাজনৈতিক সুবিধাপুষ্ট শিক্ষক ও ছাত্ররা অধিক সুবিধা ভোগ করে বিধায় মেধাবী ও সরল শিক্ষক ও ছাত্ররা হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজনীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা, মুক্তবুদ্ধির বিকাশ, গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা, দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য হলেও আমাদের বিদ্যাপীঠসমূহ পথ হারিয়ে ফেলেছে। শিক্ষাঙ্গনসমূহে শিক্ষার পরিবেশ বিরাজ না করলে শিক্ষার উৎকর্ষ সাধন অসম্ভব ।

২. অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অভাব

উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান শর্ত হলো উপযুক্ত শিক্ষকের নিশ্চয়তা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মোট শিক্ষকদের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ পিএইচডি ডিগ্রিধারী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজসমূহে উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা খুবই অল্প বর্তমানে যেসব শিক্ষক উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ যাচ্ছেন তাদের ফেরত না আসাটাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিকন্তু, শিক্ষক নিয়োগে দলনীতি, জোলানীতি, স্বজনীতি প্রভৃতি দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার মানের নিম্নগামিতা দূরীকরণেও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ অনস্বীকার্য।

৩. মেধাপাচার

আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় নানাবিধ সমস্যা থাকায় প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পর তাদের অধিকাংশই আর দেশে ফিরে আসে না। আবার, অনেক নবীন শিক্ষক উচ্চতর গবেষণার জন্য বিদেশে গিয়ে অধিক সুবিধা ভোগ করেন বিধায় আর দেশে ফিরে আসেন না। ফলে দেশের মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথে উচ্চ শিক্ষার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে।

৪. বিজ্ঞান শিক্ষার অপ্রতুলতা

আধুনিক বিশ্বের শিক্ষা মূলত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কেন্দ্রিক। কিন্তু আমাদের দেশে বিজ্ঞান শাখায় মাত্র ১০/১২ হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতে পারে। যার ফলে ছাত্রছাত্রীরা সঠিক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। তাছাড়া দেশে প্রশিক্ষণ ও গবেষণার তেমন কোনো সুবিধা নেই। বিজ্ঞান শিক্ষার এ পশ্চাৎপদতা দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য। বিরাট বাধা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাও সুবিধা থাকে কলেজগুলোতে কোনো ল্যাবরেটরি বা গবেষণার সুযোগ নেই।

৫. দরিদ্রতা

দরিদ্রতা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক প্রতিবন্ধক। দারিদ্র্যের কষাঘাতে দেশের বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায় না। তাদেরকে স্বল্প শিক্ষিত হয়েই জীবিকার সন্ধানে বের হতে হয়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে মোটামুটি কম খরচে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেবলমাত্র উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানের জন্য কেন্দ্রীভূত। যেহেতু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা সীমিত তাই অনেকেই উচ্চ শিক্ষার পথ থেকে ছিটকে পড়ে।

 

 

৬. শিক্ষার উপকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোগত সমস্যা

উচ্চ শিক্ষার মান যথোপযুক্ত রাখতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষক, গ্রন্থাগার গবেষণা জার্নাল, সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগই বেতন-ভাতা প্রদানে খরচ হয় ৷ অতি সামান্যই শিক্ষার উপকরণের জন্য ব্যয় সম্ভব। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাবে ব্যবহারিক কোর্স পরিচালনা করা ক্রমশই দুরূহ হয়ে পড়ছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহের অবস্থা আরো ভয়াবহ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে কিংবা বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতে নতুন সংস্করণের বইয়ের তীব্র অভাব রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাঝেও লাইব্রেরিতে পাঠাভ্যাস একেবারেই অনুপস্থিত। ফটোকপির ওপর নির্ভরশীলতা ছাত্রদেরকে বইপড়া থেকে আরো নিরুৎসাহিত করছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের অবশ্যই সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশে ফিরে আসতে হবে।

৭. বেকারত্ব

বেকারত্ব বাংলাদেশের একটি প্রধান সমস্যা। প্রতিবছর হাজার হাজার মেধাশূন্য উচ্চ শিক্ষিত বেকার তৈরি হচ্ছে। প্রতিযোগিতার দৌড়ে তারা টিকতে পারে না। যেহেতু উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও বেকার থাকতে হচ্ছে তাই অনেকেই উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী হয় না। স্বল্পশিক্ষিত হয়েই চাকরি খুঁজতে বের হয়। তাই উচ্চ শিক্ষাকে পেশাভিত্তিক করার ভাবনাটি ভেবে দেখার সময় এসেছে। উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধু দাঁড়ায় না যেন সার্টিফেকেট পাওয়া এবং সার্টিফিকেট নিয়ে জরু মার্কেটের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করা।

৮. শিক্ষার্থীদের ভুল মূল্যায়ন পদ্ধতি

আমাদের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। এসএসসি, এইচএসসি লেভেলে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করা হলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও শ্রেণী পদ্ধতিতে মূল্যায়ন কার্যকর। শ্রেণী পদ্ধতিতে ৬০-৬৫% নম্বর পাওয়া দুষ্কর হলেও গ্রেডিং পদ্ধতিতে ৮০-৯০% নম্বর পাওয়া কঠিন নয়। তাই কর্মবাজারে এ দু পদ্ধতির শিক্ষার্থীদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উচ্চ শিক্ষার সর্ব পর্যায়ে সঙ্গতিপূর্ণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা উচিত।

৯. পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব

আমাদের দেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পর্যাপ্ত সুযোগ এখনও তৈরি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সীমিত আসন সংখ্যা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শিক্ষাব্যয়, আবাসিক সুযোগসুবিধার অভাব, গবেষণা উপকরণাদির অভাব এসব কারণে উচ্চ শিক্ষার গতি দ্রুততর হচ্ছে না। শুধু পর্যাপ্ত ভৌত অবকাঠামোগত ও শিক্ষা উপকরণের অভাবে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই পাঠদান প্রক্রিয়ায় এখন সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টিতে কিছু সুপারিশ

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষ সাধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন-কানুন যথাযথ ও নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ অত্যাবশ্যক । সকল প্রকার অর্থনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর কার্যকর বিধান প্রয়োগ অপরিহার্য। উন্নত বিশ্বের শিক্ষা কার্যক্রম ও আধুনিকায়নকে সম্পৃক্ত করে উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হলে। এবং সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক।

উপসংহার:

একুশ শতকের গতিময় বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তথা জাতীয় উন্নতি, অগ্রগতি এবং অন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার জন্য অমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে । আর এজন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মানোন্নয়নের মাধ্যমে শিক্ষার শক্ত ভিত রচনার সাথে সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপযুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের জাতীয় উন্নয়নে প্রয়োজন মেধার চর্চা ও তার লালন । কারণ মেধাবী জাতিই সমস্ত আর্থসামাজিক প্রতিবন্ধকতা থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারে।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version