Site icon Bangladesh Gurukul [ বাংলাদেশ গুরুকুল ] GDCN

বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন রচনা

বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন

বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন রচনার একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আশা করি এটি শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে। তবে আমরা রচনা মুখস্থ করায় নিরুৎসাহিত করি। আমরা নমুনা তৈরি করে দিচ্ছি একটা ধরনা দেবার জন্য। এখান থেকে ধারণা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজের মতো করে নিজের ভাষায় রচনা লিখতে হবে।

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ। ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনবিশি বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪ কোটি। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের নব্বইতম রাষ্ট্র। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ২০০৫-এর এক প্রতিবেদনে দেখানো হয় যে, জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। রিপোর্টে বলা হয়, বতর্মান হারে যদি বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়তে থাকে তাহলে ২০১০ সাল নাগাদ বিশ্বে এর অবস্থান দাঁড়াবে সপ্তম স্থানে।

 

 

Table of Contents

বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন

 

বাংলাদেশে বর্তমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৪৭ শতাংশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করছে ৯০২ জন লোক। অদ্যাবধি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী অশিক্ষিত ও কারিগরি জ্ঞানহীন। তাই দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে যদি উপযুক্ত শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণে দক্ষ করার মাধ্যমে মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায়, তাহলে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংযোজন হতে পারে নতুন অধ্যায়ের ।

জনসংখ্যা সমস্যা ও এর প্রভাব

জনসংখ্যা সমস্যা বলতে সাধারণত কোনো দেশের প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা প্রয়োজনের তুলনায় কম জনসংখ্যাকে বোঝায়, যার দ্বারা সে দেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণ ব্যাহত হয় এবং জাতীয় অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়।

জনসংখ্যাস্ফীতির ধারণা দিতে গিয়ে ১৯৭৭ সালে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট ম্যাকনামারা বলেছেন, “পারমাণবিক যুদ্ধ ব্যতীত বিশ্ববাসীর সম্মুখে অন্যতম যে সমস্যা তা হলো জনসংখ্যাস্ফীতি। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে এটি যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ। কারণ একে সংঘবদ্ধভাবে নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় নেই।’

ইউনিসেফের প্রাক্তন মহাপরিচালক জেমস কেল্ট-এর মতে, “The central issue of our time may well turn out to be how the world addresses the problem of over expanding human members.’

অর্থনীতিবিদ ম্যালথাসের মতে, যদি কোনো দেশের জনসংখ্যা সে দেশের মোট খাদ্য উৎপাদনের চেয়ে বেশি হয়, তবে জনসংখ্যার সেই পরিস্থিতিকে জনসংখ্যাস্ফীতি বলে

অর্থনীতিবিদ আতিকুর রহমানের মতে, ‘জনসংখ্যা সমস্যা বলতে কোনো দেশের সম্পদের তুলনায় অধিক জনসংখ্যাকে বোঝায়, যা দেশের জনগণের কল্যাণ তথা জাতীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করে। অতএব জনসংখ্যাস্ফীতি যে কোনো সমাজের উন্নতি ও অগ্রগতিকে চরমভাবে ব্যাহত করে। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে চলেছে।

দারিদ্র্য, বেকারত্ব, নিরক্ষরতা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃত্তি, মাদকাসক্তি, অপরাধপ্রবণতা পুষ্টিহীনতা, স্বাস্থাহীনতা, দাম্পত্য কলহ, পারিবারিক ভাঙন, বিবাহ বিচ্ছেদ, আত্মহত্যা, নৈতিক অধঃপতন প্রভৃতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আমাদের সমাজে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরের পৃষ্ঠায় জনসংখ্যা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রভাবসমূহ আলোচনা করা হলো

 

 

১. খাদ্য ঘাটতি

জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির ফলে খাদ্য ঘাটতির সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, বাড়তি জনসংখ্যার জন্য নতুন নতুন ঘরবাড়ি তৈরি করতে হচ্ছে। তাই কৃষিজমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, ফলে প্রতি বছরই খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে ৷ ১৯৮৮ সালের পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুসারে, বার্ষিক বর্ধিত ২৪ লাখ নতুন লোকের জন্য ৩.৫০ লাখ টন খাদ্যের প্রয়োজন হয়।

১৯৯১-৯২ অর্থবছরে বর্ণিত লোকের জন্য প্রায় ১৫.৬৩ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে গিয়ে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। সুতরাং দেখা যায়, বর্ধিত জনসংখ্যা প্রতিনিয়ত খানা ঘাটভির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।

২. মৌল মানবিক প্রয়োজন পূরণে ব্যর্থতা :

সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে সমাজে বসবাস করার জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিত্তবিনোদনের চাহিদা পূরণ করা খুবই জরুরি। কিন্তু জনসংখ্যাস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী এসব মৌল মানবিক চাহিদার কোনোটাই পরিপূর্ণভাবে পূরণ করতে পারছে না।

৩. নির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি :

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছরই বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণে নির্ভরশীল। লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮৮ সালের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের চলমান জনসংখ্যার সাথে প্রতি বছর প্রায় ২৪ লাখ লোক যোগ হয়, যাদের সবাই শিশু ও নির্ভরশীল। ১৯৯১ সালের লোক গণনার দেখা গেছে, মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫১ ভাগের বয়স ১৫-৬৪ বছরের মধ্যে। কাজেই বাকি ৪৯ ভাগই নির্ভরশীল। এ নির্ভরশীলতার ফলে সমাজে অভাব-অনটন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৪. বস্ত্র ঘাটতি

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে বস্ত্রের ঘাটতি হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১২০ কোটি মিটার বস্ত্রের প্রয়োজন হয়। অথচ বস্ত্রের উৎপাদন পরিমাণ এর চেয়ে অনেক কম। তার মধ্যে প্রতি বছর চলমান জনসংখ্যার সাথে যে বিপুল পরিমাণ নতুন মুখ যোগ হয় তাদের জন্য ২ কোটি ৬০ লাখ মিটার বস্ত্রের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সুতরাং দেখা যায়, বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বন্ধের ঘাটতি হয়।

৫. বাসস্থান সমস্যা

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে বাসস্থান ও বস্তি সমস্যাও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদপ্তরের তথ্য অনুসারে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য বার্ষিক ২ লাখ ৮১ হাজার নতুন বাসগৃহের প্রয়োজন। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত প্রতি গৃহে মোট জনসংখ্যার বসতি ছিল হয়। জন করে। কিন্তু বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এ পরিমাণ বেশ বেড়েছে। অথচ বাসগৃহের সংখ্যা সে হারে বাড়েনি।

ফলে লাখ লাখ ভাসমান জনগোষ্ঠী খোলা আকাশের নিচে এবং বস্তিতে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু ঢাকা শহরের শতকরা ৩৫ ভাগ জনগণ বস্তিতে বাস করছে। সেখানে ১৫০০ বস্তিতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। কাজেই দেখা যায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধি আমাদের বাসস্থান সমস্যাকে জটিল করে তুলেছে।

৬. শিক্ষাসমস্যা ও নিরক্ষরতা সৃষ্টি

শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক মানবিক চাহিদা। অথচ বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ জনগণ বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য শিক্ষার সুযোগ থেকে চিরতরে বঞ্চিত হচ্ছে। যে হারে লোকসংখ্যা বাড়ছে সে হারে শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বাংলাদেশে শিক্ষার হার আশানুরূপভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং নিরক্ষরতার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

 

৭. স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সমস্যা বৃদ্ধি

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মানুষের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মানবিক চাহিদা । অথচ বাংলাদেশে সে হারে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে বাংলাদেশে শতকরা প্রায় ৫০ জন স্বাস্থ্যহীনতা এবং ৮৫ শতাংশ শিশু ও ৮০ শতাংশ নাগরিক পুষ্টিহীনতার শিকার । এছাড়া উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে প্রতি বছর প্রসূতি ও মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

৮. আবাদি ভূমির ওপর চাপ বৃদ্ধি

জনসংখ্যাস্ফীতির ফলে বাংলাদেশে আবাদি জমির ওপর ক্রমান্বয়ে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনসংখ্যা পরিদপ্তরের তথ্য অনুসারে বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য আনুমানিক ২ লাখ ৮০ হাজার নতুন বাসস্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এ বাসস্থান তৈরির জন্য আবাদি জমির পরিমাণ ক্রমে হ্রাস পেতে থাকে, যা সামগ্রিকভাবে কৃষি উন্নয়নকেও ব্যাহত করে।

৯. বেকারত্ব বৃদ্ধি

জনসংখ্যা বিস্ফোরণের ফলে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ। ১৯৯১ সালের লোক গণনার তথ্য অনুসারে, দেশের মোট শ্রমশক্তির ১ কোটি ৩৮ লাখ লোকই বেকার। প্রতি বছর এদের জন্য প্রায় ৮ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। অথচ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

১০. মূলধন গঠন ও শিল্পায়ন ব্যাহত

জনসংখ্যা বিস্ফোরণ আমাদের সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মূলধন গঠন ও শিল্পায়ন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, যার প্রভাবে আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে সঞ্চয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি জাতীয় আয়, মূলধন গঠন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত অন্তরায় সৃষ্টি করছে। ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে।

১১. সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না পাওয়ায় পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অশান্তি, হতাশা, ব্যর্থতা, খুন, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, আত্মহত্যা, পারিবারিক ভাঙন, নারী নির্যাতন, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১২. বিদেশী ঋণের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬০০০ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে ‘দেশে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫৪৮ মিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতি বছর এ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েই চলছে।

১৩. পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা

বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাবে ব্যাপক হারে পরিবেশ দূষণসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য রাস্তাঘাট, হাট- বাজার, বাসগৃহ, পুকুর, নলকূপ, পায়খানা, নলা-নর্দমা প্রভৃতি স্থানের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে এক মারাত্মক হুমকি ।

১৪. যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার চাপ বৃদ্ধি

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আমাদের যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাস, ট্রাক, নৌকা, ট্রলার, রেল, বিমান প্রভৃতি যানবাহনে যাতায়াত চরম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। জনসংখ্যার তুলনায় এসব যানবাহনের সংখ্যা সীমিত থাকার কারণে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে চরম নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিচ্ছে।

১৫. পারিবারিক বন্ধন শিথিল

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আমাদের দেশে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দিন দিন লোপ পাচ্ছে। দাম্পত্য কলহ, বহুবিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, আত্মহত্যা, খুন, ধর্ষণ, নিরুদ্দেশ যাত্রা, সন্তান ও বৃদ্ধদের নিরাপত্তাহীনতা প্রভৃতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে দেশের সর্বত্র পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে।

১৬. অপরাধ ও কিশোর অপরাধ

বাংলাদেশের জনসংখ্যা মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পাবার কারণে বর্তমানে উৎপাদিত ও সরবরাহকৃত দ্রব্যসমাগ্রীর মাধ্যমে অনেকের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে অনেকে সমাজস্বীকৃত উপায়ে নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছে। এর প্রভাবে সমাজে অপরাধ ও কিশোর অপরাধের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে।

অতএব মাত্রাতিরিক্তি জনসংখ্যা আমাদের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও বৃহত্তর জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্ষতিকর ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কাজেই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এই মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে ভোলা এবং যথাযথ কারিগরি ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবসম্পদে রূপান্তর করা জরুরি।

 

 

মানবসম্পদ উন্নয়ন

মানবসম্পদ উন্নয়ন বলতে আমরা কর্মক্ষম মানুষের স্বাস্থ্য, জ্ঞান, দক্ষতা এবং সফলতা বৃদ্ধিকে বুঝি । সমাজবিজ্ঞানীরা Human Resource Development বলতে বোঝান ‘It is a process of increasing knowledge, skill & capacity of a people in the society. উন্নয়নের ক্ষেত্রে মানবসম্পদই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, মানব পুঁজির (Human capital) উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কার্যকরভাবে ব্যবহার করার নামই মানবসম্পদ উন্নয়ন।

মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা

অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, ‘Quality human capital is key to services, information and innovation which have a multiplier effect on production of goods & Services. অর্থাৎ ‘যোগ্য মানবপুঁজি সেবা, তথ্য ও উদ্ভাবনের চাবিকাঠি, যা দ্রব্য ও সেবা উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুণকের প্রভাব রাখে।

দেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদের অভাবে মানসম্পন্ন দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়। এমনকি যথাযথ দক্ষ, শিক্ষিত ও যোগ্য মানবসম্পদের অভাবে উৎপাদন স্থবির হয়ে যেতে পারে। এজন্যই বলা হয়, Human factor playing the leading role in any development effort.

মানবসম্পদ উন্নয়নের উপায়

মানবসম্পদ উন্নয়নের ব্যাপারে পর্যাপ্ত স্লোগান শোনা গেলেও উন্নয়নের উপায় নির্ধারণ বেশ কঠিন। তবে সাধারণভাবে বলা যায়, মানবসম্পদ উন্নয়নের উপায় হচ্ছে দেশের জনসাধারণের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে খাপ খাওয়ার উপযোগী করে তোলা । নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১. শিক্ষা সম্প্রসারণ

মানবগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তরের অন্যতম প্রধান উপকরণ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা ছাড়া মানুষকে ‘মানবসম্পদ’ বা মানবশক্তিতে রূপান্তর করা যায় না। সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদসহ সকল বিশেষজ্ঞ শিক্ষা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানবপুঁজির সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। জাতিসংঘ মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন ১৯৯৬-এ এ মর্মে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে যে, ‘মৌলিক শিক্ষার প্রসার ছাড়া ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে কোনো দেশের পক্ষেই অর্থনীতির কাঠামোর ইতিবাচক রূপান্তর করা সম্ভব নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বপ্রথম শিক্ষাকে ‘জাতীয় নীতি’ হিসেবে গ্রহণ করে। শিক্ষা ও দক্ষতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। নবশিক্ষিত জনগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এক জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক দক্ষতার ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটে কেবল শিক্ষা সম্প্রসারণের মাধ্যমে। শিক্ষা সম্প্রসারণের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ৪২ শতাংশ। বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় সর্বজনীন শিক্ষা গ্রহণের ফলে শিক্ষার হার ১৯২০ সালে ৩০ শতাংশ থেকে ১৯৬০ সালে এসে দাঁড়ায় ৯০ শতাংশে । শ্রমিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ শিক্ষা সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন, ১৯৯৮-এ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে উন্নয়নবিষয়ক বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে বলা হয়েছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ ব্যতীত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পাকিস্তান ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের অভিজ্ঞতা থেকে দেখানো হয়েছে যে, ১৯৬০ সাল নাগাদ দেশ দুটির মাথাপিছু আয় প্রায় সমান ছিল। কিন্তু পাকিস্তানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু অন্তর্ভুক্তির হার যেখানে ছিল ৩০ শতাংশ, কোরিয়ায় সেখানে ছিল ৯৪ শতাংশ, যা বিগত ৩৫ বছরে পাকিস্তানের চেয়ে কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ আয় (GDP) তিন গুণ বেশি হওয়ার একটি অন্যতম কারণ।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধি ও মানবসম্পদ উন্নয়নের এক জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিস্ত অর্থনীতি নিয়ে জাপান আজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে কেবল মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে।

জার্মান, ফ্রান্স, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় সকল উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা। সাক্ষরতার হার মাত্র ৬৫ শতাংশ। দেশের জনসাধারণের মাথাপিছু গড় আয় মাত্র ৪৭০ মার্কিন ডলার। ‘৯০ দশকের প্রথম দিক থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা সম্প্রসারণের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (১৯৯৭-২০০২) শিক্ষার প্রসার ও মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে গিয়ে বলা হয়েছে, Education is the basic needs for socio-economic transformation and advancement of a country It is the prime ingriedient of human resource development. (P 427)

বাংলাদেশ ২০০৬ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ (Education for all) কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং আম পর্যায়ে মহিলাদের মাধ্যমিক শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে ও উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য আরো বেশি সতকর্তামূলক ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন

 

 

১. জাতীয় শিক্ষানীতির আধুনিকায়ন ও সংস্কার সাধন;

২. কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণ;

৩. স্বাস্থ্য ও শরীরচর্চা শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ;

৪. প্রযুক্তিগত শিক্ষার সম্প্রসারণ;

৫. ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিক্ষার সম্প্রসারণ;

৬. শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানো;

৭. আর্থ-সামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শিক্ষা সম্প্রসারণ;

৮. মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ ইত্যাদি।

২. স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন

সুস্বাস্থ্য মানবসম্পদ উন্নয়নের অন্যতম প্রধান পূর্বশর্ত। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হলে উৎপাদন বা সেবা প্রদান কার্যক্রম বলিষ্ঠ হয় না। উন্নত ও কার্যকর স্বাস্থ্যব্যবস্থার অভাবে বাংলাদেশের জনসাধারণের কর্মক্ষমতা ও শারীরিক যোগ্যতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম ৷ উন্নত দেশের জনসাধারণের তুলনায় আমাদের দেশের জনসাধারণের গড় উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম।

সময়োপযোগী স্বাস্থ্যব্যবস্থার অভাবে আমাদের দেশে শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। এছাড়াও মোট জনসংখ্যার বিরাট একটা অংশ রাতকানা, পঙ্গুত্বসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী জীবনযাপন করছে। সার্বিকভাবে মানবসম্পদ উন্নয়নের পথে এগুলো বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে স্বাস্থ্য সুবিধা বিদ্যমান, তার প্রায় পুরোটাই শহরকেন্দ্রিক।

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মূলত হাসপাতালভিত্তিক, এখানে গণস্বাস্থ্য অনেকটা উপেক্ষিত। অর্থ ও অন্যান্য বস্তুগত সুযোগ-সুবিধার অভাবে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবাদান ব্যবস্থা অত্যন্ত সেকেলে এবং উপেক্ষিত।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো মানবসম্পদ উন্নয়ন নীতি নেই। ফলে মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য কার্যকরী স্বাস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য। কেবল তখনই মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব হবে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮/(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জনগণের পৃষ্ঠির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলে গণ্য করবেন ‘জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০০০-এর বাস্তবায়ন বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ও মানবসম্পদের উন্নয়নে নতুন ধারা সংযোজন করবে বলে আশা করা যায়।

৩. প্রশিক্ষণ প্রদান

পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রতিষ্ঠানসমূহকে সাজাতে হলে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং Human Input-কে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের কোনো বিকল্প নেই।

প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশ্য

ক. জনসাধারণের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ;
খ. প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধিকরণ;
গ. প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের সাথে জনসাধারণের সমন্বয় সাধন;
ঘ. সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ;
ঙ. জনসাধারণের মধ্যে Interpersonal Skill বৃদ্ধি করা, যাতে অন্যদের সাথে কার্যকরভাবে কর্মসম্পাদন করতে পারে;
চ প্রতিশ্রুতি ও আনুগত্যের ব্যাপারে সচেতন করা ইত্যাদি।

প্রশিক্ষণ প্রদান জাতীয় পর্যায়ে হতে পারে; যেমন—বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যুব উন্নয়ন একাডেমী কার্যকর প্রশিক্ষণ প্রদান করে চলছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য প্রয়োজন জাতীয় সচেতনতা এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নীতিমালা ও সেই সাথে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ। কার্যকর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মানব উন্নয়ন সূচক

জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে মানবসম্পদ উন্নয়নের ব্যাপারে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ৷ প্রতি বছর জাতিসংঘ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানব উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করে এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের অবস্থান নির্দেশ করে বা মানব উন্নয়ন সূচক’ বের করে থাকে। এ সূচক পরিমাপের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বিবেচনা করা হয় । যথা

১. গড় আয়ু বা Life expectancy rate at birth.
২. শিক্ষার হার বা Literacy rate,
৩. গড় মাথাপিছু আয় বা Per Capita GDP

মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯তম। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মানব উন্নয়ন খাতে অধিক মনোযোগ দেয়ার সুপারিশ করেছে।

উপসংহার:

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক দীর্ঘমেয়াদি সমীক্ষা রিপোর্টে বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে এক দশক বিলম্বে বাংলাদেশে ২ কোটি থেকে ৫ কোটি অতিরিক্ত জনসংখ্যা যোগ হবার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণসহ অপরাপর জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মানবসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব। বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে মানব সম্পদ উন্নয়ন ছাড়া দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধির উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে ।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version