বাংলাদেশের ভূমিকম্প : এমন অনেক প্রাকৃতিক পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করি যা মানবজীবনে কল্যাণ বয়ে আে আবার এই পরিবর্তন আনে ধ্বংস, আনে মৃত্যু। বর্তমানে পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশ নাম প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। নানা প্রকার ভূপ্রক্রিয়া এর জন্য দায়ী।
মাধ্যাকর্ষণ, ভূতাপীয় শরি সৌরশক্তি প্রভৃতি ভূপৃষ্ঠের কোথাও ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনে, আবার কখনো খুব দ্রুত পরিবর্তন সারে করে । সাধারণভাবে বহিঃশক্তির সঙ্গে জড়িত ভূপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে ধীর পরিবর্তন আনে। অপরদিকে অন্তঃশক্তির সঙ্গে জড়িত ভূপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে দ্রুত পরিবর্তন সাধন করে। ভূপৃষ্ঠে দ্রুত ও আকস্মিক পরিবর্তন সাধনকারী প্রক্রিয়ার মধ্যে ভূমিকম্প অন্যতম ।
Table of Contents
বাংলাদেশের ভূমিকম্প : বিপর্যয় ও ব্যবস্থাপনা
ভূমিকম্প পরিচিতি :
ভূমিকম্প হলো মাটির কম্পন। ভূমিকম্পকে ইংরেজিতে বলা হয় Earthquake কোনো প্রাকৃতিক কারণবশত ভূপৃষ্ঠ কখনো কখনো আকস্মিকভাবে কেঁপে ওঠে। ভূত্বকের এ কেঁদে ওঠাকে ভূমিকম্প বলা হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোনো এক স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় ৷ ভূঅভ্যন্তরে যে স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের ঠিক ওপরে ভূপৃষ্ঠের বিন্দুকে উপকেন্দ্র বলে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তরে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। উল্লেখ্য, মাটির কম্পন বা আন্দোলন কেন্দ্র থেকে তরলের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং কম্পন বেগ কেন্দ্র থেকে উপকেন্দ্রে বেশি অনুভূত হয়। Panguine Dictionary of Philosophy-তে ভূমিকম্পের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে Earthquake is a movement or tremor d the earth’s crust which originates naturally and below the surface.
সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ থেকে ৭০০ কিমি গভীরে এরকম কম্পনের সৃষ্টি হয়। এগুলোর মধ্যে এ প্রতি ৫০০টিতে একটি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
ভূমিকম্পের কারণ :
সাধারণত অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক ভূমিক হয় অভ্যন্তরীণ কারণে এবং কৃত্রিম ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় কৃত্রিম কারণে। তা ছাড়া ভূমিকম্পের নিম্নলিখিত কারণগুলো দায়ীঃ
আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ভূমিকম্প হয়। অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিকম্প অগ্ন্যুৎপাতে প্রকৃতির সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। জীবন্ত বিস্ফোরক আগ্নেয়গিরি থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে পাল এলাকা থেকে বিরামহীন ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এছাড়া ভূ-আন্দোলন, তাপ বিকিরণ, ভূপৃষ্ঠের বৃদ্ধি, ভূগর্ভে পানির প্রবেশ, শিলাচ্যুতি, বিস্ফোরণ ইত্যাদি কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ভূমিকম্পের মাত্রা নিরূপণ :
ভূকম্পন এবং এর মাত্রার তীব্রতা নিরূপণের জন্য সাধারণত “সিসমোগ্রাফ” এবং রিখটার স্কেল ব্যবহৃত হয়। সিসমোগ্রাফের সাহায্যে ভূকম্পনের অনুলিপি প্রস্তুত করা সম্ভব।
অপরদিকে ভূকম্পের মাত্রা নিরূপণ করা যায় রিখটার স্কেলের সাহায্যে। এই স্কেলের মান শূন্য (০) থেকে ১০ পর্যন্ত । শূন্য (০) থেকে ২ মাত্রার ভূমিকম্পকে মৃদু (মাইন্ড), ২ থেকে ৪ পয়েন্টের নিচের মাত্রায় ভূমিকম্পকে মাঝারি (মডারেট) ৫ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পকে প্রবল (সিভিয়ার) এবং ৭-এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্পকে বিধ্বংসী (ভায়োলেট) ভূমিকম্প বলা হয়। ৮ মাত্রার কোনো ভূমিকম্প একটি শহরকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
বিশ্ব পরিমণ্ডলে ভূমিকম্প
বাংলাদেশসহ হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত অঞ্চলে যে কোনো সময় খুব বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে। সম্প্রতি সম্পাদিত একটি সমীক্ষায় খুবই নিকট অতীতে এমন বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সমীক্ষায় গবেষকরা বলেছেন, এ ভূমিকম্পের ফলে মুহূর্তের মধ্যে বিপন্ন হতে পারে পাঁচ কোটি মানুষ। ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের বড় শহরগুলো।
সায়েন্স পত্রিকায় সম্প্রতি এ সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলেরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রজার বিলহ্যাম এ সমীক্ষায় নেতৃত্ব দেন । সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, হিমালয় পর্বতমালার আশপাশের ভূমিকম্পপ্রবণ প্রায় ১২৫০ মাইল এলাকায় ৮ ১ থেকে ৮.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। বিলহ্যাম বলেন, এ অঞ্চলে কয়েক বছরে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়নি। ভারতের নিচে যে প্লেট রয়েছে তা ধীরে ধীরে এশীয় প্লেটের নিচে প্রবেশ করছে।
এতে হিমালয় অঞ্চলে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এ চাপ বৃদ্ধি হিমালয় পর্বত পাদদেশের ১২৫০ মাইলের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকাকে বিপজ্জনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। বিলহ্যাম আরো বলেন, বিপজ্জনক এ অঞ্চলে বসবাসকারী ৫ কোটি মানুষের জীবন ভীষণ হুমকির মুখে রয়েছে।
কেননা এ অঞ্চলে নির্মিত ভবনগুলোর ভূকম্পন সহ্যক্ষমতা খুবই কম। একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ১৯০৫ সালে ভারতের কাংরো শহরে ভূকম্পনে ১৯ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। এখন সে মাত্রায় ভূমিকম্পন হলে ঐ শহরেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২ লাখ ।
পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, বিশ্বে ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টারের (এনইআইসি) তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে মোট ভূমিকম্পের সংখ্যা ছিল ১১,২৯০। এ সংখ্যা ১৯৯৬ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৮,৮৬৪ । এর মধ্যে ৩ থেকে ৫ মাত্রার ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সর্বাধিক ।
জাপানে ১৯৬৪ সালের ১৬ জুন নিগাতা ভূমিকম্পের পূর্বে ও পরে বিজ্ঞানীরা সাধারণ যন্ত্রপাতি দিয়ে এবং বিভিন্ন হ্রদের পানির উচ্চতা পর্যবেক্ষণ করে ভূপৃষ্ঠের উঁচু হওয়া ও কাত হয়ে যাওয়া পরিমাপ করেন। ভূমিকম্প হওয়ার আগে একটি পর্যায়ে র্যাডন গ্যাস অত্যধিক পরিমাণে নির্গত হয়।
এই নির্গমনের মাত্রাও পরিমাপ করা যায়। ১৯৬৬ সালে তাসখন্দ ভূমিকম্পের প্রাক্কালে র্যাডন গ্যাস অধিক পরিমাণে নির্গত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, র্যাডন হচ্ছে এক ধরনের তেজস্ক্রিয় খনিজ, যা পানিতে দ্রবীভূত হয়ে থাকতে পারে। ভূমিকম্পের কয়েক মাস আগে পাথরের বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ হ্রাস পায়।
এ হ্রাসের হারও পরিমাপ করা যায়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গার্ম ভূমিকম্পের আগে বিজ্ঞানীদের যন্ত্রে এই পরিবর্তন ধরা পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে এই পরিবর্তন পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি এর আগে উদ্ভাবিত হয়েছে।
বাংলাদেশ, মিয়ানমার, আসাম টেকটোনিক প্লেট বরাবর অবস্থিত এবং এই প্লেট হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে দেশগুলো মাঝারি থেকে ভয়াবহ ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে আছে।
চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ, সিলেট, ত্রিপুরা এবং আসাম অত্যন্ত ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে আছে। কেননা হিমালয়ান প্লেট ও মিয়ানমার প্লেট পরস্পরের দিকে প্রতি বছর ১৬ মি.মি. ও ১ মি.মি. হচ্ছে। এই অগ্রসরমান প্লেটের ধাক্কায় যে কোনো সময় ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে ।
উপমহাদেশে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের তালিকা নিচের সারণিতে প্রদত্ত হলো
নাম | সাল | রিখটার স্কেলে মাত্রা |
১. বাংলাদেশ-আরাকান ভূমিকম্প | ১৯৬২ | ৮.৪ |
২. বেলাল ভূমিকম্প | ১৮৮৫ | – |
৩. গ্রেট ইন্ডিয়ান ভূমিকম্প | ১৮৯৭ | ৮.৭ |
৪. শ্রীমঙ্গল ভূমিকম্প | ১৯১৮ | – |
৫. আসাম ভূমিকম্প | ১৯৫০ | ৮.৫ |
৬. গুজরাট ভূমিকম্প | ২০০১ | ৭.৯ |
৭. পাকিস্তান | ২০০৫ | ৭.৬ |
বাংলাদেশে ভূমিকম্পের অশনি সংকেত
বাংলাদেশ বর্তমানে ভূমিকম্পের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে যে কোনো সময় বিধ্বংসী ভূমিকম্প জনজীবনে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। গবেষণা ও জঙ্গিদে মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত ছাড়াও কিছুদিন যাবৎ এ অঞ্চলে ঘন ঘন সংঘটিত ছোট মধ্যে ভূমিকম্পগুলো তারই ইঙ্গিত বহন করে।
বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং আমেরিকান ভূতাত্ত্বিক জরিপ ও ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক জরিপের বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ বর্তমানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখোমুখি। বাংলাদেশের বৃহত্তর চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে কিছুদিন যাবৎ ঘন ঘন ছোঁ মাপের যে কম্পনগুলো হচ্ছে সেগুলোকে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইঙ্গিতবহ বলে মনে করেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
চট্টগ্রামে যে ভূমিকম্পনগুলো রেকর্ড হচ্ছে সেগুলো বার্মিজ ও আন্দামান নিকোবর প্লেটো সঞ্চরণের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে অনুভূত কম্পনগুলোর চেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হচ্ছে কিছুদিন আগে রংপুর অঞ্চলে সংঘটিত ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পটি। কারণ এটির উৎপত্তিস্থল তিস্তাচুক্তি। এই চ্যুতিটি এ অঞ্চলে বেশ কটি বিপর্যয়কর ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ বর্তমানে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। গত এক দশকে আমাদের দেশে ২০১টি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন সময় ভূমিকম্পের যে মাত্রা নির্ণয় করা হয়, তা নিম্নরূপ
ভূমিকম্প অঞ্চল | সাল | মাত্রা (রিখটার স্কেলে) |
চট্টগ্রাম | ১৯৯৭ | ৬.৬ |
মহেশখালী | ১৯৯৯ | ৫.২ |
ঢাকা | ২০০১ | ৪.৮ |
ঢাকা | ২০০২ | ৫.৫ |
এর মধ্যে ১৯৯৭ সালে ভূমিকম্পের কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করে ২২ জন, ১৯৯৯ সালে ৬ জন। ২০০১ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ভূমিকম্পের সময় ছুটোছুটি করে আহত হন ২২ জন। বাংলাদেশে যে ভূমিকম্পের অশনি সংকেত বেজে উঠছে তা এই সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
বাংলাদেশে ভূমিকম্প এলাকা
১৯৯৩ সালে প্রণীত ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের সাইজমিক জোনিং ম্যাপে ভূমিকম্পের মাত্রানুযায়ী বাংলাদেশকে তিনটি এলাকা বা জোনে ভাগ করা হয়েছে
ক. মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জোন
রিখটার স্কেলে মাত্রা ৭। এই এলাকা দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে গঠিত। বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুরের পূর্বাঞ্চল, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও এ জোনের আওতাভুক্ত।
খ. মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ জোন
রিখটার স্কেলে মাত্রা ৬। দেশের মধ্যভাগ বিশেষ করে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুরের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণাংশ, জয়পুরহাট, নওশী টাঙ্গাইল, নরসিংদী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলা এই জোনের আওতাভুক্ত।
গ. কম ঝুঁকিপূর্ণ জোন
রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫। এই এলাকা দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল নিয়ে গঠিত। মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চল এই জোনের আওতাভুক্ত।
ভূমিকম্প ও ঢাকা অঞ্চল
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পৃথিবীর এমন ২০টি বড় নগরীর অন্যতম ঢাকা। অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং বাড়ি নির্মাণের সময় জাতীয় বিল্ডিং কোড না মেনে চলার কারণে ঢাকায় ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পৃথিবীর অন্যান্য নগরের তুলনায় অনেক বেশি হবে। অথচ এই নীতিমালা মেনে চললে এই ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমানো সম্ভব হতো। বাংলাদেশের ভূকম্পন বলয় মানচিত্র অনুসারে ২ নম্বর বলয়ে এ বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা ৬।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী সম্প্রতি ঢাকায় এক সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে জানিয়েছেন, ঢাকা নগরীর ঘরবাড়ির মাত্র ৫ শতাংশ তৈরি হয়েছে সুদৃঢ় কংক্রিটে।
৩০ শতাংশ কাঠামো প্রকৌশলগত নিয়মনীতি অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছে। আর ২১ শতাংশ ঘরবাড়ি নির্মাণে প্রকৌশলগত কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। এ নগরীর ৫ শতাংশ ঘরবাড়ির দেয়াল মাটির তৈরি এবং গ্যালভানাইজড আয়রনের তৈরি ৯ শতাংশ। বাকি ৩০ শতাংশ ঘরবাড়ি কাঠ ও বাঁশের তৈরি ।
পুরান ঢাকার ঘরবাড়ির ওপর সম্প্রতি পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, প্রকৌশলীদের কোনো প্রকার পরামর্শ ও সাহায্য ছাড়াই প্রায় ৬০ শতাংশ দালান নির্মিত হয়েছে। ৪০ শতাংশ দালানের ক্ষেত্রে প্রকৌশলীর সাহায্য নেয়া হয়েছে। প্রকৌশলীর সাহায্যে নির্মিত দালানগুলোর অর্ধেকেই রয়েছে দাহ্য পদার্থ।
পাশাপাশি নগরীর পুরাতন অংশে বেশির ভাগ রাস্তাই এত সরু যে, সেখান দিয়ে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি যেতে পারে না। ভূমিকম্পের সময় আগুন ধরলে সেসব বাড়ির অধিকাংশই পুড়ে ছাই হয়ে যায় । তাছাড়া ঢাকার পূর্ব-পশ্চিম এলাকার মাটি বেলে মাটি। ওয়াটার টেবিল বা ভূগর্ভস্থ পানির অবস্থান উঁচুতে থাকায় ভবনগুলোর ভিত্তি দুর্বল। তবে ভূমিকম্পের সময় দালানকোঠা ভেঙে না পড়লেও এগুলোর ভিত দেবে যেতে পারে।
ঢাকার বস্তিগুলোতে মোট জনসংখ্যার ১৭ ভাগ মানুষ বাস করে। ঝুঁকিপূর্ণ নয়, ঢাকায় এরূপ বাসা মাত্র পাঁচ ভাগ। ঢাকার ৩০ শতাংশ বাড়ি সাধারণভাবে তৈরি। অর্থাৎ ইটের তৈরি। স্নাব ছাড়া বাড়ি ২৫ ভাগ । অবশিষ্ট বাড়ি মাটি কংক্রিটের তৈরি। ঢাকায় যেসব পুরনো বাড়ি এবং ঐতিহাসিক দালানকোঠা আছে সেগুলোর বেশির ভাগই ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি। এগুলোও খুব দুর্বল।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে নগরায়নের গতি দ্রুততর হলেও বেশির ভাগ নগরই গড়ে উঠেছে কাঠামোর দালানকোঠা নিয়ে অপরিকল্পিতভাবে। নগরকেন্দ্রে জমির স্বল্পতা আর ঊর্ধ্বমূল্যের কারন। রাজধানীতে হাইরাইজ এপার্টমেন্ট কালচার ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগকালীন আশ্রয় নেয়ার মতো খোলা জায়গাও এখন ঢাকা শহরে নেই। এছাড়াও ঢাকা শহরে রয়েছে বহু পুরাতন জরাজীর্ণ দালানকোঠা যেগুলোতে মানুষ বসবাস করে। ফলে মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্পও আমাকে দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরের জন্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
ক. প্রাক দুর্যোগ প্রস্তুতি
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস প্রদান ও পরিমাপের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন, পরিচালনার বিষয় পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রজ্ঞাপনে একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ব অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা প্রয়োজন ।
কমিটির সুপারিশসমূহের মধ্যে রয়েছে
১. ভূমিকম্প সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচার।
২. পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সারা দেশে ভবন নির্মাণে জাতীয় ‘বিল্ডিং কোড’ এবং কোডের কাঠামোগ অনুসরণ বাধ্যতামূলক।
৩. রাজউকের বর্তমান ভবন নির্মাণ প্ল্যান অনুমোদনের নীতিমালার সংশোধন দরকার। কারণ এ বিষয়ে রাজউকের বর্তমান নীতিমালায় ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণে কোনো স্ট্রাকচারাল প্লান অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ঢাকা মহানগরীর প্রায় ৯৫ শতাংশ ভবন একগুলা থেকে ছয়তলার মধ্যে সীমাবদ্ধ। সুতরাং ছয়তলা পর্যন্ত ভবনের ক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসৃত স্ট্রাকচারাল প্ল্যান’ প্রযোজ্য হওয়া উচিত, যেহেতু জাতীয় বিল্ডিং কোচে ভূমিকম্পের জোনিক ম্যাপ অনুযায়ী সম্ভাব্য ভূমিকম্পের ম্যাগনিচ্যুত সহ্য করার ক্ষমতাস স্ট্রাকচারাল প্ল্যান অনুসরণের নীতিমালা প্রণীত হয়েছে।
৪. সারা দেশের শহরসমূহের নতুন এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণের সময় দমকল বাহিনীর গাড়ি এম্বুলেন্স, ক্রেন ইত্যাদি চলাচলের কথা বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনমতো রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে।
৫. ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো যে যন্ত্রপাতি তালিকা তৈরি করেছে, সেগুলো এবং সেসব যন্ত্রপাতির প্রাপ্তিস্থানের তালিকা প্রত্যেক জেল প্রশাসকের দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে যন্ত্রপাতি ও জনবল দ্রুত দুর্যোগকবলিত হলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
৬. ভূমিকম্পের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলকে উদ্ধার করে নিয়োজিত করার পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. ভূমিকম্পের পর দুর্যোগকবলিত এলাকায় ডগ স্কোয়াডের সাহায্যে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া লোকজন উদ্ধার করার ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীতে এমন স্কোয়াড রাখা যেতে পারে।
৮. ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে থাকা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের মহড়া অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা দরকার, যাতে প্রয়োজনের সময় অতি দ্রুত ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা যায়।
৯. বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন কর্তৃক সিলেটে নির্মীয়মান কেন্দ্রের সাথে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা, সিলেট, রংপুর এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা প্রয়োজন। কারণ পরমাণু শক্তি কমিশন কেন্দ্রটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে এবং ভূমিকম্পের সকল প্রকার অর্থাৎ অতি ক্ষুদ্র মাত্রার ভূমিকম্পও ঐ কেন্দ্রে রেকর্ড করা সম্ভব হবে। তাই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস প্রদান ক্ষেত্রে গবেষণা কাজের প্রয়োজনীয় উপাত্ত ও তথ্য এই কেন্দ্র থেকে সপ্তাহ করা সহজতর হবে।
১০. বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং অন্যান্য সম্পৃক্ত সংস্থাসমূহের সমন্বয়ে ভূমিকম্প, ভূমিকম্প সম্বন্ধীয় গবেষণা, পরিমাণ, পূর্বাভাস এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক গঠন ও উন্নয়ন প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতে জাতীয় ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য দক্ষ পেশাগত জনবল গঠন অত্যাবশ্যক ।
খ. ভূমিকম্পের সময় করণীয়
বাংলাদেশ ও ভারতের বেশির ভাগ মানুষ এমন সব দালান বা ঘরবাড়িতে বাস করেন, যেগুলো ভূমিকম্পের সময় প্রবলভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভূমিকম্পে মানুষ মারা যায় সেসব ভবনের কারণে, যেগুলো ভূমিকম্প হলেই ধসে পড়ে। মাত্র এক মিনিটের মধ্যে সংঘটিত হতে পারে ভূমিকম্প। আর এই এক মিনিটেই একজন ব্যক্তির জীবন-মৃত্যু নির্ভর করে । আবার এক মিনিটের দক্ষতায় কেউ বাঁচাতে পারেন নিজেকে, তার পরিবারকে, কমাতে পারেন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ।
বাড়িতে থাকলে
ভূমিকম্পের সময় বাড়িতে থাকলে নিজেকে ও পরিবারের অন্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেও দ্রুত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ বা বিচ্ছিন্ন করাই শ্রেয়। এমনকি গ্যাসের চুলা, হিটার ইত্যাদি বন্ধ রাখাই ভালো। বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজা দ্রুত খুলে দেয়া উচিত। কেননা ঘরের ওপরের অংশ ভেঙে পড়তে পারে এবং তাতে বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বাড়ির বাইরে থাকলে
ভূমিকম্প অবস্থায় বাড়ির বাইরে থাকলে বড় বড় দালানকোঠার নিচে দাঁড়ানো উচিত নয়। কেননা দালানকোঠা ভেঙে পড়তে পারে, অথবা কাচ ভেঙে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষত- বিক্ষত হতে পারে। এমতাবস্থায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলে ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
লিফটের ভেতরে থাকলে
ভূমিকম্পের সময় লিফটের ভেতরে থাকলে দ্রুত নিচে নামার চেষ্টা করতে হবে। হঠাৎ লিফটের ভেতরে আটকে পড়লে লিফট রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তবে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের সময় কখনোই লিফট ব্যবহার করা উচিত নয়।
ট্রেন বা গাড়ির ভেতরে থাকলে
ট্রেনে বা গাড়িতে ওঠার পর হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হলে কোনো জিনিস ধরে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত যাতে ট্রেন বা গাড়ি হঠাৎ থেমে গেলে যা পড়ে গেলে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
পাহাড় বা সৈকতে থাকলে
ভূমিকম্পের সময় পাহাড় ধসে যেতে পারে। কাজেই বিপদাপন্ন স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে গমন করাই উচিত। উপকূলীয় এলাকাতেও জীবননাশের ভয় থাকে । কাজেই এ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দ্রুত উপকূলীয় এলাকা ত্যাগ করা শ্রেয়।
মার্কেট, সিনেমা হল বা আন্ডারহাটও শপিং মলে থাকলে
ভূমিকম্পের সময় সিনেমা হল, সুপার মার্কেট কিংবা আন্ডারগ্রাউন্ড শপিং মলে অনেক জনসমাগম থাকায় আকস্মিক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হতে পারে। কাজেই ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের কোনো স্থানে বা ভবনে থাকলে সেসব ভবন কর্তৃপক্ষ, কর্মচারী কিংবা নিরাপত্তা রক্ষীদের সাহায্য নেয়া উচিত। তাছাড়া ঐ এলাকায় আগুন গেলে দ্রুত তা ধোঁয়ায় ভরে যাবে। এ ক্ষেত্রে নিচু হয়ে বসা বা শুয়ে পড়া উচিত। এতে ধোঁয়ার হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। এমতাবস্থায় সুযোগমতো স্থান ত্যাগ করা উচিত।

ভূমিকম্পের পরে করণীয়
ব্যাপকাকারে ভূমিকম্প হলে তা ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা সাধন করতে পারে। কাজেই সতর্কতা অবলম্বন না করলে ভূমিকম্পের পরেও নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা সমাধানে নিম্নলিখিত বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়াই শ্রেয়
ক. গুরুতর আহতদের না নাড়ানোই ভালো, যদি না আরো আহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
খ. আগুন নেভানোর চেষ্টা করা উচিত।
গ. পানি, গ্যাস ও বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা।
ঘ. রেডিও অন রাখা যাতে দুর্যোগ পরবর্তী করণীয় নির্দেশাবলী শুনতে পাওয়া যায়।
ঙ. খালি পায়ে চলাফেরা না করে পায়ে জুতো পরা ভালো ।
চ. সাধারণত ভূমিকম্পের পর আগুন লেগে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে আগুন থেকে সাবধান থাকা শ্রেয়।
ছ. গ্যাস ও বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ রাখা, যাতে অতিরিক্ত কোনো প্রকার দুর্যোগ না ঘটে।
জ. ব্যাপক দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় অসতর্কভাবে ঘোরাফেরা না করা।
উপসংহার
বর্তমান অবস্থায় যে কোনো সময় ভূমিকম্পের মতো মারাত্মক দুর্যোগ আমাদের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে হাজার হাজার প্রাণের বিলোপসাধন করতে পারে। অথচ ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষার জন্য তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ বিগত দিনগুলোতে নেয়া হয়নি। তবে ভূমিকম্পের মাত্রা নিরূপণ, পরীক্ষা ও এ বিষয়ক গবেষণার জন্য চট্টগ্রামের আমবাগানে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বর্তমান সরকার এ বিষয়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ঢাকা, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা প্রভৃতি অফিসে চট্টগ্রামের মতো উন্নত প্রযুক্তি নির্মাণে বর্তমান সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কিছুটা হলেও ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
আরও দেখুনঃ