বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রচনা

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রচনার একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আশা করি এটি শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে। তবে আমরা রচনা মুখস্থ করায় নিরুৎসাহিত করি। আমরা নমুনা তৈরি করে দিচ্ছি একটা ধরনা দেবার জন্য। এখান থেকে ধারণা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজের মতো করে নিজের ভাষায় রচনা লিখতে হবে।

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

 

বাংলাদেশের বিগত তিন দশকের উন্নয়ন প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে অর্থনীতিকে মুক্ত করা। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে নির্বিচারে শিল্প-প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এবং অদ্যাবধি বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে অর্থনৈতিক কাঠামোর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাত্রাতিরিক্ত দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে বছরের পর বছর লোকসান দিয়েই যাচ্ছে। আর এ লোকসানের বোঝা বয়ে চলার সাধ্য আমাদের দুর্বল দেশের অর্থনীতির নেই। এমতাবস্থায় অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের কারণে পরিবর্তিত বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বেসরকারিকরণের প্রয়োজনীয়তা সময়ের দাবি।

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের দৃশ্যপট

পরিবর্তিত বিশ্ব অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের প্রয়োজনীয়তা এখন সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বেশ কিছু ইতিবাচক নজির সৃষ্টি হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে লোকসান দেয়া শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের পর বড় অঙ্কের মুনাফার পথ দেখতে শুরু করেছে। উন্নত ও উন্নয়নশীল অন্যান্য অনেক দেশেও এমন নজির অগণিত ।

১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে সমসাময়িক পরিস্থিতিতে ঢালাওভাবে ৩০৫১টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হয়। এর মধ্যে ২০০০ সাল নাগাদ ৭৯০টি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণ করা হয়েছে। বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া জোরদার হয়েছে ৮০-র দশকে এশাদ আমলে, ১৯৮২ সালে নতুন শিল্পনীতির আওতায় ২২২টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ এবং ৬০টি পাট ও বস্ত্রকল থেকে পুঁজি প্রত্যাহার করা হয়।

বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বেসরকারিকরণ বোর্ড। ১৯৯১ থেকে ‘৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ১৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি হস্তান্তর করা হয় বেসরকারিকরণ বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ড. সিএফ দৌলার নেতৃত্বে এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণোত্তর পারফরমেন্সের ওপর পরিচালিত সমীক্ষায় যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে তা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক।

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

 

যে নয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয় সেগুলো হলো ঢাকা ভেজিটেবল অয়েল, চট্টগ্রাম সিমেন্ট ক্লিংকার, কোহিনুর কেমিকেল, কোহিনুর স্পিনিং, বাংলাদেশ সাইকেল, স্টাইল ফ্যাব্রিক্স, ঈগল বক্স অ্যান্ড কার্টুন, কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল এবং ফাইভ আর লিমিটেড।

এই সমীক্ষায় দেখা যায়, আলোচ্য ৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭টি বিরাষ্ট্রীয়করণের আগে মোট ১০ কোটি
৮০ লাখ টাকা লোকসান দিতো। বিরাষ্ট্রীয়করণের পর তাদের মোট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ১৮৫ শতাংশ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ সালে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে কয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীয়করণ করা হয়েছে তার প্রত্যেকটিই বর্তমানে সফলতা অর্জন করতে চলছে। বেসরকারিকরণ কার্যক্রম প্রক্রিয়ায় নতুন গতি আনার জন্য বর্তমান সরকার বহুবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সরকারের নীতি নির্ধারক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো বিতর্ক নেই বললেই চলে। গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত অর্থনৈতিক জরিপের তথ্য থেকে জানা যায়, কেবল ১৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে বিগত অর্থবছরে সরকারের লোকসানের পরিমাণ ছিল ২২৮৪ কোটি টাকা।

সরকারের বেসরকারিকরণ নীতিমালা ২০০১-এর খসড়া থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর সরকারি শিল্প ও বাণিজ্য খাতে ৬০ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। এসব লোকসানের দায়দায়িত্ব জনগণকেই বহন করতে হয়। এ অবস্থায় ১১০৬ কোটি টাকা লোকসান দেয়া এশিয়ার সর্ববৃহৎ আদমজী জুট মিলটি গত ৩০ জুন ২০০২ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকে সঠিক ও সাহসী বলে প্রশংসা করেছেন। এতে সরকারকে সম্ভাব্য শ্রমিক অসন্তোষের ঝুঁকি নিতে হয়েছে। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে আদমজী বন্ধ করতে গিয়ে সরকারকে তেমন কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি। সরকারি শ্বেতহস্তী পালনের দায় এড়ানোর ক্ষেত্রে একটি বড় টেস্ট কেসে সরকার সফলভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের নতুন প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি সরকার ৫৩টি লোকসানি রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান বেরসকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত দেশের জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থেই বেসরকারিকরণ আবশ্যক।

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

 

পদ্ধতিগত জটিলতা

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমস্যার চেয়ে পদ্ধতিগত সমস্যা অনেক বেশি। বেসরকারিকরণ কমিশনের সূত্র মতে, শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকণের সিদ্ধান্ত নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ জটিলতার সূচনা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতা, চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস ফার্ম কর্তৃক শিল্পের মূল্য কম বা বেশি দেখানো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশনের অভ্যন্তরীণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেও বেসরকারিকরণ ব্যাহত হচ্ছে।

প্রাইভেটাইজেশন কমিশন এসব বিষয় সম্পর্কে সচেতন হলেও এসব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এখন পর্যন্ত নেয়নি। বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেন বেসরকারিকরণ কমিশন কর্মকর্তারা। তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা করেন। এরপর নির্বাচিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিয়ে অর্থনীতি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আলোচনা হয়।

সে সময় মন্ত্রীদের অনেকে তাদের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণে আপত্তি জানান। তাদের আপত্তির দরুন কমিশন অনেক প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন। যেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে জোরদার আপত্তি না আসে সেসব প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের জন্য চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এরপর চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের মূল্য নির্ধারণের জন্য চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস ফার্মকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এই মূল্য নির্ধারণের কাজে ফার্মগুলো অনেক সময় কাল্পনিক তথ্যের আশ্রয় নেয়। এ কারণে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের মূল্য বেশি করে দেখানো হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানের মূল্য কম করে দেখানো হয়। সঠিক মূল্য নির্ধারণ না হওয়াটা বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সিএ ফার্মের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের মূল্য চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের পর এ নিয়ে আবার বেসরকারিকরণ কমিশনে আলোচনা হয় । এভাবেই বেসরকারিকরণের মূল্য প্রক্রিয়া এগিয়ে চলে ।

যখন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়, তখন এজন্য দুই মাস সময় দেয়া হয়। দরপত্র জমা নেয়ার পর তা নির্বাচনের বিষয়ে কমিশনে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়। এভাবে নির্বাচিত দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানের নাম অর্থনীতি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পাঠানো হয়। এ কমিটি অনুমোদন দিলে চূড়ান্ত অনুমোদনের সংশ্লিষ্ট ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়।

এরপর বেসরকারিকরণের জন্য নির্ধারিত শিল্পকে বেসরকারি খাতে স্থানান্তর করতে আরো এক মাস সময় লাগে। অনেক সময় আবার দেখা যায় শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলন ও জমির মালিকানা সংক্রান্ত মামলার ফলে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া আটকে যায় অথবা বিলম্বিত হয়। এতে কখনো কখনো দেখা যায়, একটি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দেড় থেকে দুই বছর সময় লেগে যায়।

বেসরকারিকরণ কমিশন মনে করে, বেসরকারিকরণ কার্যক্রমকে দ্রুত এগিয়ে নিতে হলে এ ধরনের পদ্ধতিগত জটিলতা কমিয়ে আনা দরকার।

 

BangladeshGurukul.com Logo 252x68 px White Bangladesh Gurukul [ বাংলাদেশ গুরুকুল ] GDCN

 

বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের ভবিষ্যৎ

আশার কথা যে, দেরিতে হলেও বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের পক্ষে ব্যাপক জনমত তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। অন্তত প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক দল বেসরকারিকরণের বিপক্ষে তেমন জোরালো বক্তব্য রাখছে না। বর্তমান সরকার বেসরকারিকরণের জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বেসরকারিকরণের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

আগের প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডকে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে রূপান্তরিত করেছে। অবশ্য এক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা এখনো কম-বেশি রয়েই গেছে। কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলেই আমলা, রাজনীতিক, স্বার্থান্বেষী মহলের নানা কারসাজি শুরু হয়ে যায়। এর বাইরে রয়েছে কিছু লোকের পুরনো মানসিকতা। তারা মনে করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মানেই জনগণের সম্পত্তি।

জনগণের সম্পত্তি ব্যক্তিবিশেষের কাছে বিক্রি করলে জনগণের অধিকার খর্ব হয়। এ ধরনের বক্তব্য এখন আর বাস্তব তথ্যভিত্তিক নয়। কারণ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে করদাতা জনগণকেই অর্থের যোগান দিতে হয়। তারপরও যদি এসব প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দেয়, তখন সে প্রতিষ্ঠান জনগণের আর কোনো উপকারে আসে না। বরং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে অনেক অপরাধচক্র সক্রিয় হয়। অদক্ষ, অলস কর্মকর্তা- কর্মচারীদের পুষতে হয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। এর ফলে ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়ে।

সরকারের কর্মদক্ষতা হ্রাস পায়। সরকারের অন্যান্য জনকল্যাণকর প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। তাই সংশ্লিষ্ট অর্থনীতিবিদরা মনে করেন বাংলাদেশে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়াকে জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই। তবে বেসরকারিকরণের পর কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান টিকে থাকে কিনা সে দিকেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি রাখা উচিত।

বেসরকারিকরণের ফলে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পের জন্য দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ে কিনা সে দিকটিও দেখা দরকার। বেসরকারিকরণ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়াকে আগের চেয়ে অনেক সহজ করা হয়েছে।

বিভিন্ন দূতাবাসে বেসরকারিকরণের তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি জানান প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা ইচ্ছাপত্র জারির ৩০ দিনের মধ্যে মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করলে ২০ শতাংশ রিবেট পাবেন, তদুপরি ইচ্ছাপত্র জারির ৩০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করলে ৩৫ শতাংশ রিবেট দেয়া হবে। এসব সুবিধা দেয়ার কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিক্রির প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

এ প্রক্রিয়ায় বর্তমানে মোট ৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাট মন্ত্রণালয়ের ২টি, জুট মিলস কর্পোরেশনের ২টি, হ্যান্ডলুম বোর্ডের ৫টি, সিল্ক বোর্ডের ২টি, বিসিআইসির ৪টি, বিএসইসির ২টি, চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশনের ২টি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১৪টি, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ৫টি, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ৬টি, বাণিজ্য মন্ত্রাণালয়ের ২টি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মূল্য নির্ধারণের জন্য চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস ফার্মকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সফলতার সাথে বেসরকারিকরণের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে আরো বহুবিধ লোকসানি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশে বেসরকারিকরণের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল বলা যায়।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

উপসংহার

সার্বিক বিবেচনায় সাম্প্রতিক বিশ্ববাস্তবতায় বলা যায়, বাংলাদেশের জন্য দ্রুত বেসরকারিকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিপুল লোকসান-ভর্তুকি ঋণগ্রস্ততার বোঝা বছরের পর বছর বয়ে চলার সাধ্য বাংলাদেশের দুর্বল অর্থনীতির নেই। তাই বাংলাদেশের স্বার্থেই বেসরকারিকরণ অপরিহার্য। দেশের আপামর জনগণের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হলে সাফল্যের সঙ্গে দ্রুত বেসরকারিকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ অন্যান্য দাতা গোষ্ঠী বাংলাদেশে শহজ শর্তে প্রদেয় ঋণ ও সাহায্যের পূর্বশর্ত হিসেবে বেসরকারিকরণ ত্বরান্বিত করার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থায় বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদই এ বিষয়ে একমত যে, বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে দ্রুত বেসরকারিকরণ ।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment