সুশাসন ও বাংলাদেশ রচনার একটি নমুনা তৈরি করবো আজ। আশা করি এটি শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের একটি উন্নয়নশীল দেশ। এ অঞ্চলের দেশগুলোর অনুন্নোয়নের মূল কারণ সুশাসনের অভাব বা সুশাসন সম্পর্কে ধারণার অভাব। বাংলাদেশের মতো দেশের জনপ্রশাসনের উদ্দেশ্য উন্নয়ন। আর উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হচ্ছে সুশাসন । তাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়ন নীতিমালার ব্যর্থতার পটভূমিতে Governance ধারণাটি ক্রমশ অধিকতর মনোযোগ দাবি করছে। ‘৮০-এর দশকের বাজার অর্থনীতি ও Structural Adjustment ধারণা যখন উত্থাপিত হয় তখন থেকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে Governance ধারণাটি বেশ জনপ্রিয় হতে থাকে।
Table of Contents
সুশাসন ও বাংলাদেশ
উন্নয়নশীল দেশের প্রশাসনিক পুনর্গঠন পদ্ধতির পূর্ববর্তী ব্যর্থতার কারণে অতীতের সকল ত্রুটি ও বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে শাসন কাঠামোকে জনগণের কল্যাণে নিয়ে আসার জন্য অনেক এজেন্সি ও দাতা সংস্থা ‘৯০-এর দশকে আসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নতুন ধারণার অবতারণা করে তার নাম দেয়া হয় সুশাসন বা Good Governance ।
সুশাসন কি সম্পর্কিত ধারণা :
সাধারণভাবে বলা যায়, সুশাসন হলো এমন এক ধরনের শাসনব্যবস্থা, যা শাসক ও শাসিতের মধ্যকার সুসম্পর্ক বোঝায় এবং সেখানে সর্বোচ্চ ও সর্বাধিক স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, মতামতের স্বাধীনতা ও পছন্দের স্বাধীনতা থাকবে ।
Landell Mills, ‘Good governance is a core I language and forms of behaviour which facilities I good governance,
Harris John প্রমুখ পণ্ডিতগণ মনে করেন, ‘Good governance is as the provision of iniversal roles and institution that enforce them and predicatable mechanism to regulate conflict over rules and inforcement.’
সুশাসন সম্পর্কে দু ধরনের মতবাদ রয়েছে। যথা :
১. বিশ্বব্যাংকের মতবাদ
২. অন্যান্য দাতা সংস্থা ও পশ্চিমা দেশের মতবাদ
১. বিশ্বব্যাংকের মতবাদ :
বিশ্বব্যাংকের মতে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিকল্প নেই। এর মাধ্যমেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসন নিম্নোক্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে—
ক. সরকারি কাজে দক্ষতা
খ. স্বাধীন বিচারব্যবস্থা
গ. বৈধ চুক্তির প্রয়োগ
ঘ. জবাবদিহিমূলক প্রশাসন
ঙ. স্বাধীন সরকারি নিরীক্ষক
চ. প্রতিনিধিত্বমূলক আইনসভার কাছে দায়বদ্ধতা
ছ. আইন ও মানবাধিকার সংরক্ষণ
জ. বহুমুখী সাংগঠনিক কাঠামো
ঝ. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা
২. পশ্চিমা দেশের মতবাদ :
সেসব দেশের সুশাসনের ধারণা অধিকতর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের সাথে জড়িত। তুলনামূলক গণতান্ত্রিক রাজনীতির কথা এক্ষেত্রে উল্লেখ্য। তারা মনে করে
ক. সুশাসন হলো অধিকতর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা।
খ. সুশাসন প্রক্রিয়া অবশ্যই আইনের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে অর্থাৎ সবার কাছে গৃহীত আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা।
গ. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলেই শাসনব্যবস্থা উত্তম হবে। ঘ. প্রশাসনিক দক্ষতা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হবে শাসন কাঠামোর অন্যতম দিক।
সুশাসন উন্নয়নের পূর্বশর্ত হওয়ার কারণ :
নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সুশাসন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান যা উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে
১. Accountability (Building Government Capacity) :
সুশাসনের অন্যতম উপাদান হলো জবাবদিহিতা। জবাবদিহিতা হচ্ছে একটি অবশ্যপালনীয় বিষয় এবং এর মাধ্যমে সরকার তার আচরণ এবং কার্যকলাপের জন্য জনগণের কাছে দায়ী থাকে। জবাবদিহিতা কোনো দেশের সরকারের নীতি প্রণয়নের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি করে। নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন দক্ষ না থাকলে সে সরকারের ওপর Private Sector গুলো আস্থা হারিয়ে ফেলে। যার ফলে সে দেশে Private Sector-গুলো বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ কমে যায়। ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। নিচে জবাবদিহিতার সাথে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো :
ক. Public Sector Management
কোনো দেশের জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় সেবা তথা সুযোগসুবিধা পেয়ে থাকে সে দেশের Public Sector Management-এর মাধ্যমে। Public sector management-এর প্রধান লক্ষ্যই হলো জনগণকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা ।
খ . Public Enterprise Management and Reform Public sector
থেকে জনগণ তাদের কাম্য সেবা না পেলে Public sector enterprise-কে নিম্নোক্তভাবে Reform করতে হবে—
i. Private sector গুলো যাতে তাদের Machinary পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে।
ii. সুশাসনের Capacity তথা সেবার মান বাড়াতে হলে স্বায়ত্তশাসন বাড়াতে হবে ।
iii. সরকারি খাতগুলোকে বেসরকারি খাতে পরিণত করতে হবে।
iv. Private sector-এর জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
গ. Public Financial Management :
Public financial management-এর ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অবশ্য পালনীয়।
i. এক্ষেত্রে বাজেট হবে ছোট ধরনের, যেখান থেকে বড় ধরনের ফলাফল পাওয়া যাবে ।
ii. আর্থিক ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মকানুন থাকতে হবে ।
iii. আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে Law, Order, Discipline নিশ্চিত করতে হবে।
iv. সরকারি বিনিয়োগ হবে উৎপাদনমুখী।
ঘ. Civil Service Refrom :
কোনো দেশের সুশাসন নিশ্চিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো Civil Service Reform করা।
2. Participation (Participatory Development Process) :
যে কোনো কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে হলে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাই অংশগ্রহণকে সুশাসনের অন্যতম উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানে অংশগ্রহণ বলতে নীতি প্রণয়ন বা নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নে যতদূর সম্ভব জনগণকে সম্পৃক্ত করাকে বোঝায়।
Participation এর সাথে জড়িত অন্যান্য বিষয়গুলো নিম্নরূপ :
i. Participation of Beneficiaries and Affected Group :
উন্নয়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে জনগণকে উন্নয়নের Beneficiaries না ভেবে উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে মনে করতে হবে। সিদান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় Beneficiaries এবং Affected Group উভয়ের সমান অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
ii. Public Sector and Private Sector Interface:
যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতগুলোর একত্রে অংশগ্রহণকে আজকাল উন্নয়ন এবং অংশগ্রহণের মূলনীতি হিসেবে মনে করা হয় ।
iii. Decentragation of Public and Service Delivery Junctions :
কোনো দেশের সুশাসনের অন্যতম উপাদান হলো Public and Service Delevery Functions কে বিকেন্দ্রীকরণ করা। এটা বলতে মূলত স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নকে বোঝানো হচ্ছে। সর্বস্তরে জনগণ বেসরকারি খাত হোক আর সরকারি খাত হোক, তারা যেন তাদের কাম্য সেবা পর্যাপ্ত পরিমাণে পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর তা বাস্তবায়ন করতে হলে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন বাড়াতে হবে।
৩. Predictability (Legal Framework) :
সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো Predictability যাকে আমরা সুশাসনের Legal Framework বলতে পারি। Predictability বলতে বোঝায়-
ক. The existance of laws, regulations and policies to regulate society.
The fair and consistant application. Predictability or legal framework নিশ্চিত করার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রয়োজনীয় :
i. Law and Development: কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য একটি আইনগত পরিবেশ খুবই জুরুরি, যা Traditional আইনের শাসনের ধারণাকে আচ্ছাদিত করবে। তাছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আইনের পুনর্বণ্টন এবং সংস্কার করতে হবে। উন্নয়নকে ব্যাহত করে এমন ধরনের আইন প্রণয়ন থেকে দূরে থাকতে হবে।
ii. Legal Frameworks for Private Sector Development: কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত বা প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সুশাসন তথা উয়নের গতিকে আরও গতিশীল করার জন্য Private Sector-গুলোর জন্য প্রয়োজনীয় Financial sector এবং নিরাপত্তা জোরদার ও নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উন্নয়ন সহায়ক প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রণীত আইনের প্রয়োগ হবে সমান ও নিরপেক্ষ।
8. Transparency:
স্বচ্ছতা হলো কোনোকিছুর সম্ভাব্য স্পষ্টতম চিত্র। কোনো দেশের উন্নয়ন তথা সুশাসনে সরকারের স্বচ্ছতা বা Transparency গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সাধারণত স্বচ্ছতা বলতে জনগণের নিকট সরকারের Rules and Regulation এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কে তথ্যের অবাধকরণ বা সরবরাহকে বোঝায়। সরকারি সিদ্ধান্তের স্পষ্টতা জনগণকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রভাবিত করে ও জনগণ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে পারে এবং সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে যা সরকারকে জবাবদিহি করে তোলে । মোট কথা স্বচ্ছতা সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে।
৫. স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা :
Bergon-এর মতে, ‘Local Government is the yard stick of Good Governance’, যে দেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা যতটা শক্তিশালী ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সে দেশে গণতন্ত্র ততটাই বিকশিত। এ কারণেই সুশাসনের অন্যতম চাহিদা একটি শক্তিশালী কার্যকরী দক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত স্থানীয় পর্যায়ের সরকার । স্থানীয় সরকার সুশাসনের অন্যতম উপাদান, কেননা এটি—
i. জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের নিশ্চয়তা দেয়।
ii. জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
iii. গণমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে ।
iv. প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনে। এক কথায় স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানই সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম মাত্রা। কেননা তা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৬. দক্ষ ও ফলপ্রসূ বিচার ব্যবস্থা :
সুশাসনের অন্যতম শর্ত হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা । আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় কেবল নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করে। এতে বিচার বিভাগ দক্ষ ও ফলপ্রসূ হয়, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম সহায়ক।
৭. মানবাধিকার
সব মৌলিক অধিকারই মানবাধিকার। কিন্তু মানবাধিকারসমূহ মৌলিক অধিকারের মতো ভিন্নভাবে সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকে না। মানবাধিকারের উৎস হলো আন্তর্জাতিক আইনের বিভিন্ন বিষয় এবং এর পরিধি খুবই ব্যাপক।
মানবাধিকারগুলো কোনো দেশের ভৌগোলিক সীমারেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ নয় বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত এবং প্রতিটি দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য । মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হলেই সামগ্রিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে।
একটি সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পুলিশ বাহিনী দ্বারা সাংবাদিক নির্যাতন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধাদান, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নমূলক প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার, নির্যাতনমূলক আচরণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তাই দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয় ।
বাংলাদেশের শাসন প্রক্রিয়া ও সুশাসন সঙ্কট :
বাংলাদেশ রাষ্ট্র তথা সরকারের শাসন প্রক্রিয়ার গুণগতমান এখনও অনেক নিচুস্তরে রয়ে গেছে। এর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ। সুদীর্ঘ কয়েক দশকের সামরিক শাসনের নেতিবাচক ঐতিহ্যের দরুণ শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে না ওঠা অন্যতম কারণ। আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বন্দ্ব সংঘাতের প্রভাব, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর আরোপিত উন্নয়ন নীতিমালা; দেশ প্রেমিক, দক্ষ ও দৃঢ়চেতা জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের সুশাসন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নীত হতে পারেনি। কেন বাংলাদেশে সুশাসনের সঙ্কট তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. Unaccountable Administration and NGO’s :
আমাদের প্রশাসনিক স্তরগুলোতে ঊর্ধ্বতনের কাছে অধঃস্তন একেবারেই জবাবদিহি নয়। জনগণ চায় ও মনে করে প্রশাসন তাদের মতো করেই তাদেরকে সুশাসন উপহার দিবে। বর্তমানে বাংলাদেশে NGO-গুলো ব্যাপক হারে বিস্তার করেছে। কিন্তু বাস্তবে আমাদের দেশে তাদের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। কাজকর্মে জবাবদিহিতা নেই। দাতা সংস্থাগুলো এবং দাতাদেশ থেকে সাহায্য পেয়ে দানগ্রহণকারী দেশের সাথে কোনোরূপ পরামর্শ ছাড়াই তারা প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন করে থাকে। ফলে দেশে উন্নয়ন ব্যাহত হয় । তাই এনজিওগুলোকে জবাবদিহি না করলে সুশাসন সম্ভব হবে না ।
2. Executive Control :
দেশের সর্বময় ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে প্রধান নির্বাহীর হাতে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩৫ বছরের মধ্যে ২৬ বছর প্রধান নির্বাহী ছিলেন একাধিক সামরিক শাসক। তাদের সমর্থন দিয়েছে কতিপয় রাজনীতিবিদ এবং আমলারা। ফলে নির্বাহী কর্তৃত্বের প্রভাব সুদৃঢ় হয়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের প্রধান নির্বাহী হলো প্রধানমন্ত্রী। সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর মতামতকে উপেক্ষা করে স্বদলীয় কোনো সাংসদের বিরুদ্ধে মত পোষণ করলে উক্ত সাংসদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। ফলে সংসদীয় পদ্ধতিতে ও নির্বাহী কর্তৃত্বের প্রভাব প্রকট । আর এজন্য দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না।
3. Problem in Legislature:
বাংলাদেশে শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হলো আইন প্রণয়ন । প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো আইন ‘আইন পরিষদে গৃহীত হওয়া সম্ভব নয়। সাংসদকে পাশ কাটিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও নীতি প্রণীত হচ্ছে। তাই বলা যায়, আইন প্রণয়নের সমস্যা সমাধান করে সুশাসনের পথ সুগম করা এখনো সম্ভব হয়নি।
4. Political accountability:
সুশাসনে দুটো পূর্বশত হলো জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা। জবাবদিহিতারও আবার ধরন রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক জবাবদিহিতা । সাধারণভাবে রাজনৈতিক জবাবদিহিতা বলতে বোঝায় জনগণের কাছে রাজনীতিবিদদের দায়বদ্ধতা, রাজনীতিবিদদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণ কতটা সংশ্লিষ্ট বা অবগত তার ওপর সুশাসন নির্ভরশীল। বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার ফলে রাজনৈতিক জবাবদিহিতা কিছুটা নিশ্চিত হয়েছে। একে আরও সম্পষ্ট করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা নতুবা সুশাসন বাধাগ্রস্ত হবে।
5. Bureaucratic Accountability and Structure:
আমলাতান্ত্রিক জবাবদিহিতা সুশাসনের অন্যতম পূর্বশর্ত। এটি লক্ষণীয় যে, আমলাতন্ত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে একটি বড় কর্তৃত্বপরায়ণ ভূমিকা পালন করছে। একটি বহুদলীয় সমজান্ত্রিক দেশে আমলাতন্ত্র যদি সত্যিকার অর্থে জবাবদিহিমূলক না হয়, তাহলে তাদের কর্তৃত্ব আরও জোরালো হবে। জবাবদিহি হতে হবে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে। এতে শাসনব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। আমলাতান্ত্রিক জবাবদিহিতার জন্য নিম্নোক্ত কাঠামোর দরকার-
i. সুষ্ঠু সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনা উর্দ্ধাতন কর্তৃপক্ষীয় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
ii. সুষ্ঠু শ্রেণীবিন্যাসই পারে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দীর্ঘসূত্রীতা ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমাতে।
iii. সুষ্ঠ শ্রমবিন্যাস প্রশাসনের কাজের চাপ কমিয়ে আনে ফলে জবাবদিহিতার প্রক্রিয়া সহজতর হয়।
iv. অনুকূলে রাজনৈতিক পরিবেশ থাকলে জনপ্রতিনিধিগণ আমলাদের ওপর নির্ভরশীল থাকে না।
V. দক্ষ আমলাতন্ত্র গণমুখী নীতি প্রণয়নও বাস্তবায়ন করে থাকে।
আমাদের দেশের আমলাতন্ত্র জবাবদিহি নয়। এর কারণ নিম্নরূপ-
i. আমলাতন্ত্রের পরিধি ব্যাপক
ii. আমলাদের বেশির ভাগই সমাজের এলিটগ্রুপ হতে আগত
iii. আমলাতন্ত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বেশি
iv. Professionals এর অভাব
V. প্রকল্প ব্যবস্থাপনার মান খুবই নিম্ন।
6. Local Government Structure :
যে দেশের স্থানীয় সরকার কাঠামো যত শক্তিশালী ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সে দেশে গণতন্ত্র ততটাই বিকশিত এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার কাঠামো এতটা শক্তিশালী নয়। ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
7. Effective and Efficient Judiciary :
সুশাসনের অন্যতম শর্ত হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা তখনই সম্ভব হয় যখন নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথক নয়। ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না।
8. Transparency and Freedom of Expression :
বাংলাদেশের মতো একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে স্বচ্ছতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু এটি বহুলাংশে অনুপস্থিত। জনপ্রতিনিধিগণ জনগণের পণ্য কি করছে তা স্বচ্ছভাবে জানা যায় না এবং প্রচার মাধ্যমে সরকারি নিয়ন্ত্রণের ফলে অবাধ তথ্যপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। যেমন- বাংলাদেশে রেডিও এবং টেলিভিশনের ওপর আজ পর্যন্ত সরকারি নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান, যা স্বাধীন মত প্রকাশের পরিপন্থি।
9. Political and Administrative Corruption :
দুর্নীতির ক্ষেত্র হলো দুটি- রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক। জনপ্রতিনিধিগণ ও আমলারা উভয়াই দুর্নীতিগ্রস্ত। এরা একে অপরের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। বাংলাদেশে এ উভয় প্রকার দুর্নীতি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। অবৈধ কাজ করার বিরুদ্ধে প্রশাসকগণ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে না। কেননা তারা রাজনৈতিক কর্তৃত্বের নিয়ন্ত্রণাধীন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে উত্তম শাসনব্যবস্থা পাওয়া যাবে না। সমাজ প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে বিরাজমান দুর্নীতির মূলোৎপাটন করেই কেবল সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সম্ভাব্য করণীয় :
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে নিম্নোক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে :
১. প্রশাসনিক সংস্কার :
বাংলাদেশে সুশাসন অনেকটা নিশ্চিত করা যেতে পারে জনপ্রশাসন সংস্কারের মাধ্যমে বা প্রশাসনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে। জাতিসংঘের মতে, ‘Administrative reform is the deliberate use of authority and inftuence to apply new measures to an administrative system so as to changes is to goalf, structures and procedures with a view to improving it for development’. আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল ব্রিটিশ শাসনামলে।
পাকিস্তান আমলেও যার কোনো সংস্কার করা হয়নি। প্রশাসন রাষ্ট্র যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সরকারের বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে প্রশাসন মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। দক্ষ ও গতিশীল প্রশাসন দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির সহায়ক। তাই একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশকে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে হলে প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
২. দুর্নীতি দমন :
বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি জড়িয়ে রয়েছে। দুর্নীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচকে বাংলাদেশ পরস্পর চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দুর্নীতি সুশাসনের অন্যতম প্রধান অন্তরায়। তাই সত্যিকার অর্থে দুর্নীতি নির্মূল করতে না পারলে বাংলাদেশে সুশাসনের বিষয়টি শুধু বক্তৃতা ও বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে যাবে।
৩. ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদদের আতাত পরিহার করা :
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আরেকটি প্রধান অন্তরায় হচ্ছে ব্যবসায়-রাজনীতি আতাত। বাংলাদেশে এখন ব্যবসায়ী, মামলা ও রাজনীতিবিদরা একে অপরের সাথে সম্পর্ক রেখে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। তারা সরকারি নীতিমালা প্রণয়ন ও আইন তৈরিতে সরকারকে প্রভাবিত করে থাকে। সরকার তখন জিম্মি হয়ে যায় এবং সুশাসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাই সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে ব্যবসায়ী আমলা ও রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক পরিহার করতে হবে।
৪. রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন রোধ :
বর্তমান বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায় হচ্ছে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নের কারণে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সুষ্ঠু রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়নের মাধ্যমে দ্রুত সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।
৫. গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ :
বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় অর্থনীতির যে রূপরেখা পরিলক্ষিত হয় তা হলো গণতান্ত্রিক রাজনীতির অর্থনৈতিক কর্মসূচি । মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং এ আলোকে গৃহীত অর্থনৈতিক কর্মসূচি ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে যেটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভে ব্যর্থ সরকার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সুশাসনের নিশ্চয়তা প্রদান সম্ভব হবে না। তাই বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান।
৬. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা :
বাংলাদেশে বর্তমানে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সুশাসন ব্যবস্থার অভাব প্রকট। স্বাচ্ছন্দ্য ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে অর্থনৈতিক অনুন্নয়নের পাশাপাশি বাড়ছে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, দেখা দিচ্ছে সুশাসনের অভাব। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছাড়া বাংলাদেশে সুশাসনের পথ প্রশস্ত করার কোনো উপায় নেই। তাই স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন সৃষ্টির মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা যেতে পারে।
৭. গণমাধ্যমের ভূমিকা
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জনমত সৃষ্টিতে গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ওয়ার্কিং পেপার ‘The Media’s Role in Curbing Corruption’-এ বলা হয়েছে The Role of the media is critical in promating good governance and controlling corruption. It is not only raises public awareness about corruption, its causes consequences and possible remedies but also investigates and reports incidences of corruption’. সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমসমূহ কার্যকর অস্ত্র হিসেবে কাজ করে একটি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
৮. ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি :
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিয়ে ন্যায়পাল পদ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য এবং সরকারি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ক্ষমতাধর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য ন্যায়পাল পদ প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।
৯. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন জোরদার :
সুশাসনের অন্যতম শর্ত হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থেকে বিচার বিভাগকে পৃথকীকরণ। কিন্তু বাংলাদেশে এটি যথেষ্ট সমস্যার মুখোমুখি। বিচার বিভাগ শাসন বিভাগের কাছ থেকে প্রভাবমুক্ত না থাকায় সুষ্ঠু ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া অধঃস্তন আদালতগুলো নির্বাহী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং এ ব্যবস্থা সংশোধনের কোনো পদক্ষেপ এ যাবৎ গৃহীত হয়নি। তাই বলা যায়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মাধ্যমে সুশাসন অনেকাংশে নিশ্চিত করা যায়।
১০. সরকারি নিরীক্ষণ কমিটি গঠন করা :
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারি পর্যায়ে সকল প্রকার দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সরকারি নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা যেতে পারে। কারণ রাষ্ট্রের কার্যনির্বাহী বিভাগের বাজেটের ওপর আইনগত নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করা গেলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না।
উপসংহার :
উপরিউক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা গেলে বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হতে পারে। বস্তুত, সুশাসন তথা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সর্বত্র সততার একটি আবহ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার একটি পরিমণ্ডল। প্রতিটি ব্যক্তি যদি তার কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছ থেকে সততার সাথে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করেন এবং প্রতিটি ব্যক্তিকে যদি জনগণ ও তার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করানো যায় তাহলে দুঃশাসন থেকে দেশবাসী রক্ষা পেতে পারে এবং এর ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা তথা উন্নয়নের পথ সুগম হতে পারে।
আরও দেখুনঃ